ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবি করে বিএনপি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছ থেকে হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পদাক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বক্তব্যের শুরুতেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল কী বলেছেন? পদযাত্রা, জয়যাত্রা, বিজয়যাত্রা! তাদের এই পদযাত্রা পরাজয়ের যাত্রা, পতনযাত্রা শুরু হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধিদলের কাছে বিএনপি কী পেয়েছে? ইউরোপীয় ইউনিয়ন আপনাদের কী দিয়ে গেছে? তত্ত্বাবধায়ক দিয়ে গেছে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ দিয়ে গেছে? তাদের কাছে দাবি করেছেন। কী পেয়েছেন? হাঁসের ডিম আর ঘোড়ার ডিম পেয়েছেন! আমেরিকার প্রতিনিধিদল কী দেবে? শেখ হাসিনার পদত্যাগ, তত্তাবধায়ক সরকার? দিয়ে গেছে ঘোড়ার ডিম!
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সংসদ বিলুপ্তি হবে না, শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রশ্নই ওঠে না। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। লাফালাফি করে কোনো লাভ হবে না। যতই লাফালাফি করেন কোনো লাভ হবে না। আমরা আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছি, আমরা নির্বাচনের আগে ও পরে শান্তি চাই। তত্ত্বাবধায়ক আমরা চাই না, চায় বিএনপি। বিএনপি মনে করছে, ২০০১ আর ২০০৬ সালের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকার, তাদের দলীয় সরকার তাদের ক্ষমতায় দিয়ে যাবে। তাদের আশায় গুড়ে বালি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমরা বিলুপ্ত করিনি, উচ্চ আদালত বাতিল করেছেন। তারা আদালত মানে না, তারা আইন মানে না। নিজেদের মতো হলে সব মানে। আমাদের কথা একটাই, বাংলাদেশের সংবিধানে যা লেখা আছে, আমরা সেটাই করব। নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুসরণ করবে, বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে যত কিছুই করুক, এক চুলও নড়ব না।
বিএনপি সকল শয়তানের দলের আসল ঠিকানা মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, যতই মারামারির চেষ্টা করেন কোনো লাভ হবে না। এই দেশে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। আমরা কারও কাছে মাথা নত করব না। বাংলাদেশে সব শয়তানের দলের আসল ঠিকানা বিএনপি। তাদের কথার কোনো ঠিক নাই, একবার বলে এক দফা আবার বলে ৩২ দফা। তারা রাষ্ট্র মেরামতের কথা বলে। মেরামত আপনাদের করতে হবে না। বিদ্যুতের নামে খাম্বা দিয়েছেন। মেরামত করেছেন খাম্বা। আপনাদের দেখানোর মতো কী আছে? দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দ্রুতই কমে যাবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ওপর ভরসা রাখুন, দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। বিএনপির ওপর ভরসা করলে লাভ হবে না। তাদের কাছে ঘোড়ার ডিম ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা সতর্ক থাকবেন, ধৈর্য ধরবেন। তারা (বিএনপি) বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে তাদের কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা বুঝে গেছে গত নির্বাচনের মতো হবে তাদের অবস্থা। তিন মাস আগে বলেছে, এবার আমরা পাব ১০ সিট, এখন বলছে ৩০ সিট। ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া বলেছিল, আমরা ৩০ সিট পাব, তখন তারা ৩০ সিট পেয়েছিল, বাকি সব পেয়েছে শেখ হাসিনা। এই দলের কথা ভুয়া, এই দল ভুয়া।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন।
আরও পড়ুন:
গায়ে পড়ে গোলমাল করবেন না, নেতাকর্মীদের কাদের
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০২৩
এসকে/এসকেবি/এমজেএফ