ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নাটোরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে কব্জি কর্তন, অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
নাটোরে যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে কব্জি কর্তন, অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলী

নাটোর: আধিপত্য বিস্তার ও শত্রুতার জেরে নাটোরে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীকে (৩৫) কুপিয়ে জখম ও ডান হাতের কব্জি কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে মিঠুনের সমর্থক পাঁচজন আহত হয়েছেন।

রোববার (২৩ জুলাই) দিনগত রাত পৌনে ১০টার দিকে শহরের বলারীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।  

আহত মিঠুন আলী শহরের ভবানীগঞ্জ মহল্লার মৃত শাহাবুদ্দিন আলীর ছেলে ও পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য চারজনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তারা হলেন- যুবলীগ কর্মী আলী হায়দার, আরমান আলী, আব্দুলাহ আল রাব্বি, বকুল মিয়া ও জাহিদুল ইসলাম।

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি/তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু শেখ ও যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীর সঙ্গে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গত ১৬ এপ্রিল মিঠুনসহ তার সমর্থকরা নান্নু শেখকে কুপিয়ে জখম করে। এরপর থেকেই এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

রোববার রাতে মিঠুনসহ তার সমর্থকরা বলারীপাড়া এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় নান্নু গ্রুপের সমর্থকরা তাদের পথ রোধ করে প্রথমে চোখে-মুখে পানি ও মরিচের গুঁড়া ছুড়ে মারে। পরে মিঠুনের ওপর হামলা চালিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাতের কব্জি কেটে নেয়। এ সময় মিঠুনকে বাঁচাতে গিয়ে মিঠুন সমর্থক আরমান আলী, আব্দুলাহ আল রাব্বি, বকুল মিয়া, আলী হায়দার আহত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য মিঠুনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনা নিয়ে এলাকায় যাতে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে।

এদিকে নাটোর জেলা যুবলীগের সভাপতি বাশিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হওয়ার পর থেকে নাটোর শহরে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে, রক্তপাত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে সহিংসতা বেড়েছে।  

পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করে বলেন, যুবলীগ নেতা মিঠুনসহ ৫ জনের ওপর যে বর্বরোচিত হামলা হয়েছে তার নিন্দা জানাই এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।

তিনি দাবি করে বলেন, জেলা যুবলীগের মধ্যে কোনো কোন্দল নেই। তবে জেলা আওয়ামী লীগের অন্তঃদ্বন্দ্বের কারণে যুবলীগের ওপর প্রভাব পড়ছে। এটা আওয়ামী লীগের জন্য অশুভ লক্ষণ।  

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান জেলা যুবলীগের সভাপতি বাশিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরীর বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক ঘটনা নয়। প্রকৃতপক্ষে স্থানীয় দুইটি পক্ষের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বা কোন্দলের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে যারাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করছি। পাশাপাশি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।