ঢাকা: আওয়ামী লীগকে আর কোনো ধরনের শান্তি সমাবেশ না করার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বলতে চাই - আপনারা আগামীতে শান্তি সমাবেশ করতে গেলে ব্যানারে লিখবেন অশান্তির সমাবেশ।
শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মাদরাসাশিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করীম ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
ইসলামী আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।
ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থা একই উল্লেখ করে মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ভারতে কি হয়, প্রতিবছরই কোনো না কোনো ইস্যুতে মুসলিম নিধন চলে। আর বাংলাদেশের দিকে দেখলে মনে হয়, বিশ্বে যে মুসলিম নিধন চলছে সেখানে বাংলাদেশও নাম লিখিয়েছে। এর জন্যই হাজার হাজার আলেম-ওলামাকে শহীদ করা হলেও কোনো ধরনের বিচার হয় না। হাফেজ রেজাউল করিমকে কতদিন হয়েছে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু তার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি নেই।
সরকার রাতদিন উন্নয়নের গান গায় কিন্তু সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসেন না এমন মন্তব্য করে মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, মসজিদের মাইকে ডেকেও মানুষকে ভোট দিতে আনতেন পারেন না। এর কারণ কি জানেন, সরকার সাধারণ মানুষকে মূল্যায়ন করে না। যে জন্য তারা ভোট দিতে আসেন না।
সরকার বুঝে গেছে যে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে তারা পাস করতে পারবে না উল্লেখ করে মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, কারণ এই সরকারের কাছে ৫ থেকে ৭ পার্সেন্ট ভোট আছে মাত্র। সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিবাজ বাদে এই সরকারকে কোনো ভালো মানুষ ভোট দেবে না। এ কারণেই এই সরকার জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে চায় না। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন যে কোন দেশের এবং কোন সরকারের সমর্থন পাওয়া যায়। ইতিহাস বলে কারো সমর্থনে কোনো কাজ হবে না। মজলুম জনতা যদি জেগে উঠে কেউ তাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই সাধারণ জনগণের দাবি মেনে নিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতেই হবে। দাবি না মানলে ইসলামি আন্দোলনসহ বিরোধী কোন দলই এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে একটা কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে চাই বলেই জাতীয় সরকারের দাবি জানাচ্ছি। তাই এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করব না। আর এই জালিম সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে হলে রাজপথে আমাদেরকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতিত্ব করে সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।
তিনি বলেন, হাফেজ রেজাউল করিম কে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তাতে আমরা গভীর ভাবে মর্মাহত। কিন্তু এই কোরানের হাফেজকে হত্যার পরও প্রশাসন কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে বলতে চাই আপনারা কি এমন শান্তি সমাবেশ করেন, যেখানে আপনাদের প্রধান অতিথি বক্তব্য শেষ না হতেই এমন ন্যাক্কারজনক হামলা চালালেন। এই ধরনের শান্তি সমাবেশ আমরা চাই না। পাশাপাশি ভারতের হারিয়ানায় মুসলমানদের হত্যার জন্য তীব্র নিন্দা জানাই।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফরায়জী, যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশর ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সভাপতি মাওলানা নূরুল ইসলাম নাঈম, সাধারণ সম্পাদক মুফতি হাবিবুল্লাহ মিসবাহ, সহ সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মুরাদ হোসেন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতি আরমান হোসেইন, প্রচার সম্পাদক মুফতি মোসাইদুর রহমান, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলা মো ইমতিয়াজ আলম, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো শহিদুল ইসলাম, সহ প্রশিক্ষণ সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ শিব্লি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এম এম শোয়েব, প্রচার সম্পাদক মাওলানা মাকসুদুর রহমান, ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ সভাপতি আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি ইউসুফ পিয়াস, ইসলামি যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হাফিজুল হক ফাইয়াজ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা আল আমিন সোহাগ, ইসলামি শ্রমিক আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ সভাপতি পারভেজ মিয়া প্রমুখ।
এসময় সমাবেশ শেষে একটি প্রতিবাদী মিছিল বায়তুল মোকাররম এর উত্তর গেট থেকে বিজয় নগর পানির টেংকি পর্যন্ত যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২৩
ইএসএস/এসএএইচ