ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ দুজন গুলিবিদ্ধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২৩
নারায়ণগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ দুজন গুলিবিদ্ধ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা বাবু বাজার এলাকায় রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ নেতাসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।  

শনিবার (৫ আগস্ট) রাতে সোনারগাঁ থানা পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে।

এর আগে শুক্রবার (৪ আগস্ট) দিনগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ ফেরদৌসুর রহমান রূপগঞ্জের ভুলতা ইউনিয়নের মর্তুজাবাদ এলাকার মৃত জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। তিনি ভুলতা ইউনিয়ন যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া গুলিবিদ্ধ ডালিম একই এলাকার মন্টু মিয়ার ছেলে।

গুলিবিদ্ধদের পরিবারের অভিযোগ, গুলিবিদ্ধ ফেরদৌসুর প্রায় ৪ মাস আগে রূপগঞ্জের মাছিমপুর এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে শওকত আলী ওরফে শুটার রিয়াজের বড় ভাইয়ের নামে রূপগঞ্জ থানায় ডাকাতি মামলা দায়ের করেন। মামলা করার জেরে শুক্রবার রাতে শুটার রিয়াজ ও তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী ৭-৮ জন অনুসারী নিয়ে ফেরদৌসুরকে তুলে এনে পায়ে গুলি করেন। এ সময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে ডালিমও গুলিবিদ্ধ হন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, ফেরদৌসুর ও ডালিম গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া ডালিমের পিঠে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুজনই ঢামেকে চিকিৎসাধীন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রূপগঞ্জের বাসিন্দা ফেরদৌসুর ও ডালিম নামে দুজন জামপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা বাবুর বাজার এলাকায় একটি চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলযোগে ৭-৮ জন এসে তাদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ফেরদৌসুর নামে একজনকে বাজারের পাশে জেরপূর্বক টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যান। পরে তাকে গুলি করেন। ফেরদৌসুরের পাশে থাকা ডালিম তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও গুলি করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

রূপগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, শুটার রিয়াজ ও মোহাম্মদ আলী রূপগঞ্জের বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। মাদক ব্যবসা, জমি দখল ও হত্যাসহ নানা অপরাধ তারা করে থাকেন। রূপগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জামপুর ইউনিয়নে তাদের অবাধ বিচরণ। রিয়াজ বাহিনী ওই এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অস্ত্র চালানোয় পারদর্শীর কারণে শওকত আলীকে সবাই শুটার রিয়াজ নামে চেনেন। তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

ফেরদৌসুরের বড় ভাই হানিফ মিয়া বলেন, সোনারগাঁয়ের পেরাবো বাজারে ফেরদৌসুরের একটি মুদি দোকান ছিল। প্রায় চার মাস আগে ওই দোকানে চাঁদা তুলতে গিয়ে শুটার রিয়াজ অনুসারীদের সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক হয়। এর জেরেই শওকত আলী তার বাড়িঘর লুটপাট করে। এ ঘটনায় ফেরদৌসুর বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা তুলে নিতেই শুক্রবার রাতে শুটার রিয়াজ ফেরদৌসুরকে তুলে নিয়ে তার পায়ে গুলি করেন। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

তিনি বলেন, ফেরদৌসুরের একটি পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। রাতে আরেকটি পায়ে অস্ত্রোপচার হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ফেরদৌসুর এখন শঙ্কামুক্ত। তবে ডালিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তার অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা রয়েছে।

অভিযুক্ত শুটার রিয়াজকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তার ভাই মোহাম্মদ আলী ফোন রিসিভ করেননি। তাকে ক্ষুদে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি।

সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ জানান, রূপগঞ্জে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গুলি ছোঁড়া হয়েছে এমন খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগও করেননি। দুই পক্ষকে শনাক্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৩
এমআরপি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।