ঢাকা: আজকে যারা বড় বড় কথা বলছেন, এই দেশের ভোট ব্যবস্থাকে তারাই সর্বপ্রথম বিধ্বস্ত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু।
রোববার (৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনীতিতে ৫৮ দলীয় জোটের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সম্মিলিত জাতীয় জোট, ৫৮ দলীয় (ইউএনএ) এর আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আমির হোসেন আমু বলেন, আজকে যারা ভোটের কথা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেন, তাদের আমলেই জিয়াউর রহমান যখন এই দেশে প্রথম যখন হ্যাঁ/না ভোট করে, তখন কোনো প্রার্থী না থাকার পরেও ব্যালট বাক্স নিয়ে সিল কাটিয়ে ভর্তি করা হয়েছিল। এই ছিল তাদের ভোটের রাজনীতি। তারা যতদিন ক্ষমতায় ছিলেন, প্রতিটি নির্বাচনে তারা কারচুপির মাধ্যমে তাদের জয়যাত্রা করেছেন।
‘তার কারণ কী? যেহেতু বাংলাদেশের সংবিধানে সামরিক আইনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের কোন সুযোগ নাই তাই সেটা করার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্লামেন্টে তার অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য জন্য টু-থার্ড মেজরিটি প্রয়োজন। কিন্তু একটি সদ্য দল কীভাবে এই মেজরিটি পাবে? তাই তারা বাধ্য হয়ে এই কারচুপি আশ্রয়কে গ্রহণ করে। সেই কারচুপির ধারায় তাদের স্বপ্ন সফল হয়েছে বলেই আজকে তারা কারচুপির স্বপ্ন দেখে। এই দেশের ভোট ব্যবস্থাকে তারাই সর্বপ্রথম বিধ্বস্ত করেছিল। আজকে যারা বড় বড় কথা বলছেন, এই দেশের যা কিছু অঘটনের মূল, সেটা তাদের আমল থেকেই শুরু এবং সেটাই চলে আসছে। ’
আমির হোসেন আমু আরও বলেন, আজকে দেশের উন্নয়ন, দেশের অগ্রগতি যা কিছু হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারের মাধ্যমে হয়েছে এবং আগামী দিনে তার নেতৃত্বে এটা হওয়া সম্ভব। আজকে যে গণতান্ত্রিক ধারা সেটা যদি অব্যাহত না থাকে এই দেশ আবার পিছিয়ে যাবে। এখানে যদি কোনো সরকার অগণতান্ত্রিক পন্থায় আসে তাহলে দেশ পিছিয়ে যাবে। তাই সেই গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাকে স্থায়ী করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী যে নির্বাচন সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য ৫৮ দলীয় জোট এগিয়ে এসেছে। জনমত সৃষ্টি করে তারা তাদের দল নিয়ে নেমে পড়বে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং এই দেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম এটাই প্রমাণ করতে হবে। কারো নির্দেশে নয়, কারো সল্যুশনে নয়, কারো ভয়-ভীতিতে এই দেশ পরিচালিত হতে পারে না, হবে না।
তিনি বলেন, এই আগস্ট মাসেই ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাত্রে ৭১ এর পরাজিত শক্তিরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যা করেছিল। প্রাথমিকভাবে তারা বোঝাতে চেয়েছিল, এটি একটি পারিবারিক হত্যাকাণ্ড। কিন্তু পরবর্তীতে আমরা দেখলাম বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যে চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন, কারাগারের অভ্যন্তরে জাতীয় এই চার নেতাকে হত্যা করা হলো। তখন এই দেশের মানুষ বুঝতে শুরু করল, ওই হত্যাকাণ্ড কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, কোনো পরিবারের বিরুদ্ধে নয়, কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়, কোনো গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়; এই হত্যাকাণ্ড এই দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মূল্যবোধকে হত্যা করা। সেটাই আজকে প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই এই দেশে সামপ্রদায়িক রাজনীতির উত্থান, জঙ্গিবাদের উত্থান।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২৩
এইচএমএস/এমজেএফ