ঢাকা, বুধবার, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এখনই সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্তব্য নয়: ফখরুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২৩
এখনই সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্তব্য নয়: ফখরুল ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইনের যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা নিয়ে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এখনই নয়। আরও বিস্তারিত পর্যালোচনা করে আনুষ্ঠানিক মতামত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

এরআগে, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভা সোমবার (০৭ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

স্থায়ী কমিটির মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায় দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে বর্তমান অবৈধ সরকার, বিচার বিভাগকে অবৈধ, অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদী শাসনকে স্থায়ী করার লক্ষ্যে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

বিচার বিভাগের সব স্তরগুলোকে দলীয় করণের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তার সহধর্মিণী অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ডা. জোবায়দা রহমান, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দুদক ও দলীয় পুলিশ কর্তৃক দায়ের করা মিথ্যা মামলার বেআইনি ফরমায়েশি রায়, নিম্ন আদালতের স্বেচ্ছাচারিতা, উচ্চ আদালতে নায় বিচার থেকে বঞ্চিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন দমন করার জন্য ন্যক্কার জনকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

সভা মনে করে, সম্প্রতি সরকারের আজ্ঞাবহ দুদক দায়ের করা মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিশেষ করে অরাজনৈতিক ব্যক্তি ডা. জোবায়দা রহমানের ফরমায়েশি রায় সেই সত্যই প্রমাণ করে।

এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জনাব আমান উল্লাহ আমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য লুৎফরজ্জামান বাবরসহ অসংখ্য রাজনৈতিক নেতার ফরমায়েশি রায়, নিম্ন আদালতে সাতক্ষীরা থেকে বারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য জনাব হাবিবুর রহমান হাবিবকে ৭০ বছর কারাদণ্ড, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কে এম আক্তারুজ্জামান, ঈশ্বরদীর পৌর বিএনপির নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর মেয়র মোখলেসুর রহমান বাবলুসহ ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার (০৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ইসহাক সরকারসহ ২৭ জনকে দুই বছর সাজা দেওয়া, এই সত্য সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে, সরকার অনৈতিক, অসাংবিধানিক, বেআইনি ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিরোধী রাজনীতিকে নির্মূল করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে। বিচার বিভাগে আওয়ামী রাজনীতির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের বিচারকের পদে নিয়োগ দিয়ে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হচ্ছে। সভায় বিচারকদের পবিত্র আসনে যারা বসে আছেন, তাদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। সভায় খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ডা. জোবায়দা রহমানাসহ সাজাপ্রাপ্ত সব রাজনৈতিক নেতার রায় বাতিল ও সব মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়।

জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর নৃশংস অমানবিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে পুলিশ গুলি, টিয়ার শেল, লাঠি চার্জ ও জল কামান ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে বানচাল করে দেওয়া, শত শত মানুষকে আহত করা ও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সভায় অবিলম্বে গ্রেফতার করা সবাইকে নিঃশর্ত মুক্তি ও সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এক দফা আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বয় করে কর্মসূচির প্রস্তুতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের পরিবর্তে সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা হয়। সভা মনে করে, এটা নাম পরিবর্তন করে নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন করার নামান্তর। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্বলিত বক্তব্য পরবর্তীতে জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২৩
টিএ/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।