ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট চোর, ফ্যাসিস্ট ও অবৈধ আখ্যা দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, মানুষ আর এই ভোট চোরদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীদের মুক্তি ও সংবিধান সংস্কার করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা এ কথা বলেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে ও রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের পরিচালনায় এই সমাবেশে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদউল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমনসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার দেশ চালাতে পারছে না। একটি ডেঙ্গু মশা মারতে পারছে না। যে সরকার একটি ডেঙ্গু মশা মারতে পারে না, সেই সরকার কিভাবে দেশ চালাবে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকার ডিম-পেঁয়াজ-চিনি-আলুর-আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। বাজার সিন্ডিকেট সেটি মানছে না। অর্থাৎ, সরকারের থেকে সিন্ডিকেটের ক্ষমতা বেশি৷
তিনি বলেন, আমার দেশের টাকা উড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জুয়ার বাজারে। এই সরকার অবৈধ সরকার। রাষ্ট্র চালাতে হলে মানুষের সম্মতি লাগে। মানুষ ভোটের মাধ্যমে তাদের সম্মতি দেয়। কিন্তু এই সরকার ভোট জালিয়াতি করে ক্ষমতায় আছে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বেহেস্তে আছে। যেখানে মানুষ জাহান্নামে আছে। এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। এই সরকারের বিরুদ্ধে সব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজপথে অবস্থান নিয়েছে। নৌকা যত ডুববে তাদের শরীক দলগুলোও পক্ষ পরিবর্তন করবে। মানুষ আর এই ভোট চোরদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকে যে পরিস্থিতি, বাজারে আগুন জ্বলছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পরবেন না। আবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোনো সিন্ডিকেট নেই। মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। জনগণ শীঘ্রই রাজপথে নেমে তাদের ক্ষমতা থেকে টেনে নামবে। এজন্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ক্ষমতা থেকে নামলে তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।
তিনি বলেন, আজকে সরকার আদালতকে ব্যবহার করে মানবাধিকার কর্মীদের জেলে ভরছে। সরকার গদি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলছে। জনগণকে দেশের দায়িত্ব নিতে হবে। সরকারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলতে হবে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই সরকার আবার এক তরফা নির্বাচন করার পায়তারা করছে। কিন্তু এক তরফা নির্বাচন আর বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও আপনাদের (আওয়ামী লীগ) এক তরফা নির্বাচন প্রতিহত করা হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, আজকের এই ফ্যাসিবাদী শাসক, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ব্যবসায়ীরা মিলে যে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। জনগণ এই লুটপাটের সিন্ডিকেট ভেঙে ফ্যাসিবাদী শাসকের পতন ঘটানো ছাড়া ঘরে ফিরে যাবে না। এই অবৈধ শাসকের দিন শেষ। এখনও সময় আছে, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন।
সমাবেশ শেষে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা একই দাবিতে গণমিছিল করেন। মিছিলটি মতিঝিল থেকে শুরু হয়ে টিকাটুলির হাটখোলায় গিয়ে শেষ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
এসসি/এসআইএ