ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রায় ৫০ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিরোধের ঘটনায় প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে টেন্ডার ভাগাভাগির চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে বিবদমান যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুইটি পক্ষের ভেতরে ভেতরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় নিয়ম মেনে টেন্ডারে অংশ নেওয়া বৈধ ঠিকাদারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে বলেও দাবি সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
অভিযোগ উঠেছে- ঠিকাদারি কাজের বৈধ লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও একটি চক্র বাইরে থেকে ঠিকাদার এনে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কমিশন চুক্তি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এতে বৈধ ঠিকাদারদের সিডিউল ক্রয়ে বাধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি করেছেন একাধিক ঠিকাদার।
তবে পুলিশ পাহারায় শতভাগ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে সিডিউল ক্রয়-বিক্রয় চলছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম। এতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মাসের শুরু থেকে হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয় সংক্রান্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের সিডিউল বিক্রির কার্যক্রম শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই জেলা যুবলীগ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুইটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলে গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও সশস্ত্র মহড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
অভিযোগ উঠেছে- ওইদিন জেলা যুবলীগের সভাপতি আজাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান রুমেল সিডিউল কিনতে গেলে বাধা দেয় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নাসিম মণ্ডল নিকু ও তার পক্ষের লোকজন। এ সময় দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
তবে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি নাসিম মণ্ডল নিকু বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কাউকে বাধা দেইনি বরং যুবলীগ আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করেছে।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, টেন্ডার নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের পর হাসপাতালের ঠিকাদারি কাজ ভাগাভাগির চেষ্টা চলছে একটি প্রভাবশালী মহলের নিয়ন্ত্রণে। এতে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মেডিকেল ছাত্রলীগসহ স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকটি পক্ষ বৈধ ঠিকাদার না হয়েও টেন্ডারের অংশীদার হতে দৌড়ঝাঁপ করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সিডিউল বিক্রি হয়েছে। সেই সঙ্গে রেজিস্ট্রি ডাকযোগেও সিডিউল জমা হয়েছে। আগামীকাল (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেন্ডার বক্স খোলা হলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল ২১ সেপ্টেম্বর টেন্ডার বক্স খোলা হলে হবে। এরপর বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা ভাগাভাগির সুযোগ নেই।
** মমেকে ৫০ কোটি টাকার টেন্ডার নিয়ে যুবলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের হাতাহাতি
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩
আরএ