ঢাকা: হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জুড়ি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেছেন, দেশে হিন্দুদের পরিত্যক্ত সম্পত্তি ৮০ শতাংশের ওপরে আওয়ামী লীগের দখলে।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) গণঅধিকার পরিষদের ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণঅধিকার পরিষদের একাংশ (রেজা কিবরিয়া)।
অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম সম্প্রদায় হিন্দু সম্প্রদায়। কোনো হিন্দু লোকের সঙ্গে যদি একা একা কথা বলেন, দেখবেন তাদের মধ্যে কত ক্ষোভ। তাহলে ভোট দেয় কেন? কারণ জামায়াতে ভোট না দিলে জামায়াত তার বাড়িঘর পোড়ায় না, বিএনপিকে ভোট না দিলে, বিএনপি তার ঘরে আগুন দিতে যায় না। কিন্তু আওয়ামী লীগে ভোট না দিলে, তারা বাড়িতে গিয়ে আগুন দেয়।
তিনি আরও বলেন, হিন্দুদের তাড়াতে পারলে সম্পদ পাওয়া যায়, আর দেশে থাকলে ভোট পাওয়া যায়। হিন্দুরা যদি আপনাদের (বিরোধী দল) কাছ থেকে নিরাপত্তা পায়, তাহলে আওয়ামী লীগে ভোট দেবে না।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, রাজনৈতিক সৌজন্যবোধ তখনই থাকে, যখন গণতন্ত্র থাকবে। গণতন্ত্র যেখানে থাকে না সেখানে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়। ক্ষমতার পেছনে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন যখন পাহাড় সমান হয়ে যায়, তখন বারবার ক্ষমতায় থাকার তীব্র আকাঙ্ক্ষা চেপে বসে। তখন তাদের থেকে বিদায় নেয় মনুষ্যত্ববোধ।
গয়েশ্বর রায় বলেন, সরকার চেষ্টা করছে গাবতলীর মতো একটি গরুর হাট জমাতে। দর কষাকষির অফার, আসনের নিশ্চয়তা, সঙ্গে কাড়ি কাড়ি কাড়ি টাকা। আমার মনে হয় তারা গুছিয়ে উঠতে পারছেন না। কয়েকদিন আগে আমেরিকা সফরের সময় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নাকি কিছু কিছু জিনিস কেনার জন্য অনেক অনেক টাকা নিয়ে গেছেন। কিন্তু কিনতে পারেননি। কিছু কিনতে না পেরে মাথা গরম করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অশ্রাব্য বক্তব্য দিচ্ছেন। মানুষ কখনো মানুষকে নিয়ে এমন বক্তব্য দিতে পারে না।
বিএনপির ২৮ তারিখের সমাবেশে পুলিশের অনুমতির প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক ফয়সালা হবে রাজনৈতিক দল, সরকার, সরকারের রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। সেটা বাকযুদ্ধের মধ্য দিয়েই হোক আর যেভাবেই হোক, সেটা হবে। কিন্তু সরকার সিদ্ধান্ত দেবে না, পুলিশ সিদ্ধান্ত দেবে। সুতরাং, গণতন্ত্র না থাকায় পুলিশতন্ত্র একটু বেশিই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কারণ, এই সরকারের কথা, যেই লুটপাট করুক না কেন, তারা তো সবাই ভালো আছে। সবাইকে ভাগ দেয়। এজন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে কিছু সুবিধাভোগী তৈরি করতে পেরেছেন। সেই সুবিধাভোগীরাই ভাবছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থেকে গেলে তার যতটা না ক্ষতি হবে, তার থেকে বেশি ক্ষতি হবে তাদের (সুবিধাভোগী)। এই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, সদস্য সচিব ফারুক হাসান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রহমান, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২৩
এসসি/এসএএইচ