ঢাকা: বিএনপি হাঁটুভাঙা, মাজাভাঙা, কোমরভাঙাদের নিয়ে ঐক্যজোট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেটে বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজয় শোভাযাত্রার আগে সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকের বিজয়ের মিছিল, নৌকার মিছিল। ঢাকা শহর নৌকার শহর। খেলা হবে, ছাড়াছাড়ি নেই, খেলা চলবে। ৭ তারিখে ফাইনাল। বিএনপি নেই, খবর নেই। তাদের এক দফা ভুয়া। বিএনপি ভুয়া। তাদের এক দফা ভুয়া।
১৮৯৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ও ২৭টি দল আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাহলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না যারা বলে, তারা ভুয়া। টিআইবি ভুয়া, ইফতেখার ভুয়া, সুজন ভুয়া, বদিউজ্জামান ভুয়া। এগুলো সব ভুয়া। এগুলো সব বিএনপির দোসর। ২৮ তারিখে লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি বিদায় নিয়েছে। বিএনপি ভুয়া, ধানের শীষ ভুয়া।
বিএপির নেতা নেই উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা আন্দোলন করবে কাকে দিয়ে, নির্বাচন করবে কাকে দিয়ে। ৭০ শতাংশ মানুষ তৈরি হয়ে আছে শেখ হাসিনার নৌকাকে ভোট দেওয়ার জন্য। খেলা হবে। ১৮৯৬ জন খেলবে। খেলার মাঠ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ১৮৯৬ জন খেলোয়াড়। দুর্নীতি, নাশকতা, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাট, হাওয়া ভবন, আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
আজ ট্রেনে আগুনে পুড়ে শিশু ও নারীসহ চারজন মারা গেছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দৃশ্য গাজায় ইসরায়েলের যে হত্যাকাণ্ড, যে গণহত্যা, শিশু হত্যা, নারী হত্যা, সেই একই দৃশ্য আজ বাংলাদেশে আমরা দেখলাম। ট্রেনে আগুন দিয়ে চারটি তাজা প্রাণ যারা কেড়ে নিয়েছে তাদের ক্ষমা নেই। তাদের আন্দোলন নাশকতা, মানুষ পোড়ানোর আন্দোলন।
বিএনপি মিথ্যা কথা বলে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ হাজার নেতাকর্মী নাকি জেলে আছে। আমি পুরোপুরি খবর নিয়ে চ্যালেঞ্জ করছি, জেলে আছে ১১ হাজার। এর মধ্যে আজকে জামিন পেয়ে দুই হাজার বের হয়ে যাচ্ছে। থাকছে নয় হাজার। ২১ হাজারের কথা ভুয়া। বিএনপি মিথ্যা কথা বলে, মিথ্যাচার করে। বিএনপি ভুয়া। বিএনপির নেতাগুলো ভুয়া।
বিএনপি নেতারা অন্ধকারে থেকে বক্তব্য দেয়, ছবি তোলে মন্তব্য করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, কুয়াশার মধ্যে ১০-১২ জন নিয়ে মিছিল করে। এটা বুঝি আন্দোলন? বিএনপির আন্দোলন ভুয়া।
তিনি বলেন, আগামী বছর আবার আন্দোলন হবে। বিএনপি এই বছর আর পারলো না। আগামী বছর আন্দোলন শুরু হবে। রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ করে পাঁচ বছর কেটে যাবে। পাঁচ বছরের শেষে গিয়ে আবারও আন্দোলন। তারেক রহমান লন্ডনে আছে। তারেকের সাহস নেই। এলে এখানেই মোকাবিলা করতো। রাজপথে থাকতো, জেলে যেতো। জেলে যেতে যার ভয়, সে তো ভুয়া। তারেক রহমান ভুয়া, তার কথা ভুয়া। আন্দোলন আর হবে না।
তিনি আরও বলেন, যারা ভোটে বাধা দেবে, ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেবে, যারা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইবে, তাদের মনে রাখতে হবে দেশের জনগণ নির্বাচনমুখী। তারা প্রতিহত করবে। এদের প্রতিহত, পরাজিত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনের বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের গেট থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি ৩২ এর বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মী শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তারা ট্রাক, পিকআপসহ পায়ে হেঁটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এসসি/এইচএমএস/আরআইএস