ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘ভোট যেখানেই দাও ঘোষণা করা হবে নারায়ণ চন্দ্রের নাম’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৪
‘ভোট যেখানেই দাও ঘোষণা করা হবে নারায়ণ চন্দ্রের নাম’

খুলনা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ অভিযোগ করেন।

আকরাম হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের লোকজন বলছে, ভোট যেখানেই দাও না কেন ঘোষণা করা হবে নারায়ণ চন্দ্রের নাম। এজন্য তিনি তার আজ্ঞাবহ সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজে লাগাচ্ছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সমগ্র জাতিকে একটি সুন্দর, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন, তখন খুলনা-৫ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তার কিছু অনুসারী ও আজ্ঞাবহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছেন।

আকরাম হোসেন আরও বলেন, আমার কর্মীদের প্রচারণায় বিঘ্নের সৃষ্টি করছে নারায়ণ চন্দ্রের লোকজন। নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে নানা ছলাকলার আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ডুমুরিয়া উপজেলায় বিগত ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন, ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ডুমুরিয়া উপজেলার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ব্যবহার করে তার ও তার নিজস্ব প্রার্থীকে কারচুপির মাধ্যমে বিজয়ী করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এস এম কামরুজ্জামান, শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ বিশ্বাস, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আশরাফ হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অফিসারের প্রত্যক্ষ মদদে বিতর্কিত পদ্ধতিতে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপরোক্ত অফিসারসহ তার ভাইপো শিক্ষক দেবাশিষ চন্দসহ তার অনুসারী অনেক শিক্ষককে কাজে লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ারকে কারচুপি করে জোর পূর্বক হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অনুরূপভাবে ২০২১ সালেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বর্তমান উপজেলা নির্বাচন অফিসার কল্লোল বিশ্বাস ও উপরোক্ত অফিসার ও সংসদ সদস্যের আজ্ঞা বাস্তবায়নকারী একটি বিশেষ গোষ্ঠীর শিক্ষকরা পক্ষপাতিত্ব করায় এবং সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের নির্দেশনা পালন করায় ১৪টি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীদের মধ্যে ১২ জনই পরাজিত হন।

বিদ্রোহী ও অন্য দলের চেয়ারম্যানদের নিয়ে নিজস্ব বলয় সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় ওই সব নির্বাচনের বিতর্কিত ফলাফল ও নানা অসঙ্গতি নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে। বর্তমানে এসব মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গত ১৫ বছর ধরে নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সংসদ সদস্য থাকায় এসব অফিসারদের সঙ্গে তার রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এসব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এমনকি তার মিশন বাস্তবায়নে বেশ কয়েকজন অফিসারকে পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিয়ম মাফিক ২/৩ বার অন্যত্র বদলি হয়ে গেলেও পূণরায় ডিও লেটার দিয়ে তাদের ডুমুরিয়া উপজেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। শান্তি প্রিয় ভোটাররা আশঙ্কা করছেন এসব কর্মকর্তা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে কোনোভাবেই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না, বরং তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৩
এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।