ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এনায়েতপুরে ঈগল সমর্থকদেরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আহত ২০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
এনায়েতপুরে ঈগল সমর্থকদেরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আহত ২০

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসকে ঈগল প্রতীকে ভোট দেওয়ায় তার সমর্থকদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে নৌকা সমর্থকদের বিরুদ্ধে।  

এসব ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ২০ সমর্থক আহত হয়েছেন।

 

রোববার (৭ জানুয়ারি) গভীররাত পর্যন্ত এনায়েতপুর থানার খামারগ্রাম, ভাঙ্গাবাড়ি সীমান্ত মার্কেট, বেতিল, বেলকুচি উপজেলার চর চালা, জিধুরী, তামাই ও সমেশপুরে এসব ঘটনা ঘটে।  

সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের নির্বাচনী ফলাফলে ৪ হাজার ২৪২ ভোটের ব্যবধানে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মমিন মণ্ডলকে বিজয়ী ঘোষণার পর এসব ঘটনা ঘটে।  

এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও খামার গ্রামের বাসিন্দা বিমল দাস বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে নৌকার বিজয় মিছিল থেকে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ভয়ে বাড়ির সবাই পেছন দিয়ে পালিয়ে যাই। হামলাকারীরা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করে এবং ঘরের ভেতর ঢুকে আলমিরাতে থাকা নগদ আড়াই লাখ টাকা ও সাড়ে ছয় ভরি সোনার গহনা লুট করে নিয়ে যায়।  

অভিযোগ রয়েছে, এছাড়া ভাঙ্গাবাড়ি সীমান্ত মার্কেটের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ মোতালেব হোসেনকে মারধর করা হয়। এছাড়া তার চায়ের দোকান ও বসতবাড়িতে ভাঙচুর এবং বেতিলে আব্দুল্লাহ মণ্ডলের সিমেন্টের দোকান ভাঙচুর করা হয়। নৌকার প্রার্থী আব্দুল মমিন মণ্ডলের সমর্থক যুবলীগ লীগ নেতা জুয়েল রানার নেতৃত্বে এসব তাণ্ডব চালানো হয়।  

এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের সমর্থক হওয়ায় খামারগ্রামের প্রবীণ সমাজসেবক আব্দুল কুদ্দুস সরকার (৭৩), ইউপি সদস্য পঙ্কজ চন্দ্র (৪৫), এলাঙ্গী চরের বাচ্চু মিয়া (৪০), দেওয়ান তলার খোশাল মণ্ডলের ছেলে মামুন হোসেন (২০) ও চাঁদপুর চরের আমজাদ আলীকে (৪৫) মারধর করেছে আব্দুল মমিন মণ্ডল বাহিনী।  

অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের ছোট ভাই বেতিল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন বিশ্বাসের মাছের আড়তে হামলা এবং ভাতিজা নান্নু বিশ্বাসের চামড়ার গোডাউন ও দোকান ভাঙচুর করা হয়।  

বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটার কথা স্বীকার করে নৌকার সমর্থক এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সিরাজ বলেন, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কিছু ঘটনা ঘটেছে। আমরা নেতাকর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছি। আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সেই চেষ্টা করছি।  

এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিমল দাসের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অন্য ঘটনাগুলোতে এখনো থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুরো থানা এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।  

এদিকে আব্দুল মমিন মণ্ডলের লোকজনের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেলকুচি উপজেলার চর চালা গ্রামের আরমান ও সাইফুল, জিধুরী উত্তরপাড়ার আব্দুর রাজ্জাক শিকদার, আদাচাকীর মাহমুদুল ও ইয়ামিন, সমেশপুরের নিক্সন এবং তামাই পশ্চিমপাড়ায় রুবেল মোল্লা।  

বেলকুচি থানার ওসি মো. আনিছুর রহমান বলেন, বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতাও পেয়েছি। আমরা কিছু জায়গায় গিয়ে থামিয়েও দিয়েছি। তবে তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হলেও তারা কোনো অভিযোগ এখনো দেননি। অথচ নৌকার সমর্থকরাই দুটি অভিযোগ দিয়েছেন।  

সিরাজগঞ্জ পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সন্তোষ কুমার কানু বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে হিন্দুদের বাড়িতে হামলার ঘটনা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক । আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং দোষীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।