নরসিংদী: নরসিংদী-৪ (মনোহরদী-বেলাব) আসনের সংসদ সদস্য শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছেলে মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদি। তাঁকে ফাঁসাতে এক ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর গুলির নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সম্প্রতি যুবলীগ নেতা মাজহারুল ইসলামের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। তার পর থেকে গুলির নাটকের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এলাকায়।
এ ছাড়া ইতিপূর্বে মাজহারের বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের আগের দিন ৬ জানুয়ারি রাতে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বীরুর সমর্থক চন্দনবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রউফ হিরনের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে শিল্পমন্ত্রীর ছেলে সাদির বিরুদ্ধে। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওসহ অডিওতে মাজহারুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘হিরনকে (চন্দরবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান) বলবা জোরালোভাবে বলার জন্য যে সাদি ইয়া করছে।
তিন-চার মিনিটের মধ্যে ডিসি আসতেছে। ২৫টা গাড়ি নিয়ে আসতেছে। সব লোকজনকে রাস্তায় বের হতে বলো। হিরনকে বলবা যেন সে স্পষ্টভাবে বলে সাদিই তাকে গুলি করছে।
এটা যেন শক্তভাবে বলে এবং এটা তোমরা লাইভ করে ফেলবা। পাঁচ-ছয়জনে লাইভ করলে ছোটার আর রাস্তা পাবে না। সব লোক জড়ো হইতে বলো। বিশাল বড় কিন্তু অবস্থান শো করতে হবে। বললে হিরণ যেন সুন্দরভাবে স্পিসগুলা দিয়ে দেয়।
একেবারে স্পষ্টভাবে তারে (সাদী) যেন দোষী করে দেয়। ’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা কাজী মাজহারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগের রাতে চন্দনবাড়ির চেয়ারম্যানের বাড়ি ও চালাকচরে একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কী ঘটেছে সেটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমাদের দল ক্ষমতায় আসছে ও মনোহরদীতে নৌকা বিজয়ী হয়েছে তাতেই আমি খুশি। মনোহরদী ও বেলাবতে আমি দলের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহবস্থান চাই। ’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা শিল্পমন্ত্রীর ছেলে মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি-জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী একটি চক্রের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসাতে একটি নাটক সাজিয়েছিল। যা এখন সবার কাছে স্পষ্ট। এ ব্যাপারে সহায়তা নেব। ’
উল্লেখ্য, যুবলীগ নেতা কাজী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। ২০১৭ সালে মনোহরদী উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মিয়া শরীফ রায়হান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাসেম ও সুব্রত তুহিনের নামে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্ররোচনা দেন বলে অভিযোগ রয়েছে কাজী মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা মিয়া শরীফ রায়হান বলেন, যুবলীগ নেতা কাজী মাজহার প্রায় সময়ই দলীয় প্রভাব ও তাঁর স্ত্রী এনএসআই কর্মকর্তা বিলকিসের প্রভাব দেখিয়ে বিভিন্ন সময় দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা ও হয়রানি করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
এসআই