ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে `গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টি'র আত্মপ্রকাশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৪
শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে `গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টি'র আত্মপ্রকাশ সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দলটির মহাসমন্বয়ক মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারী। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: গণতান্ত্রিক সংস্কার পদ্ধতিতে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আত্মপ্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টি।

শনিবার (২ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ রাজনৈতিক দলটি আত্মপ্রকাশ করে।

আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন দলটির মহাসমন্বয়ক মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারী।

তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক সমস্যা উত্তরণের নিরিখে, একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক, সংস্কারমুখী, আধুনিক, সময়োপযোগী ও গতানুগতিক রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা ও প্রথাকে অতিক্রম করে, ভিন্ন মাত্রার একটি রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিলাম। আমরা অঙ্গীকার করছি যে, যে সব মহান আদর্শ (মুক্তিযুদ্ধের চেতনা) আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদে প্রাণোৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিল, সেই সব আদর্শ এ দলের মূলনীতি হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের মূল লক্ষ্য হবে- গণতান্ত্রিক সংস্কার পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের সেবার নিশ্চয়তা, সম্প্রসারিত মৌলিক চাহিদা (মানবতা, বস্ত্র, খাদ্য, নিরাপত্তা, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, বিনোদন ও যোগাযোগ) মানবাধিকার, ভোটাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।

আগামী ৩০ মার্চ গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টির গঠনতন্ত্র প্রকাশ ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা যাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করতে পারি এবং দেশের জনগণ ও সমগ্র মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষা করে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারি, সেই লক্ষ্য সামনে রেখে এ দলের গঠনতন্ত্র তৈরি করা হবে এবং এর রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করা হবে আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য।

ঘোষণাপত্র পাঠ শেষে দলটির মহাসমন্বয়ক বলেন, সাধারণত সবাই নির্বাচনের আগে দল গঠন করে, আমরা করছি একটি জাতীয় নির্বাচনের পর। প্রায় সবাই দল তৈরি করে আমন্ত্রণ জানায়, আমরা দল গঠনের আগে গঠন প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহণের জন্য ‘দেশের মালিক’ জনগণকে অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ব্যক্তি নেতৃত্বের পরিবর্তে টিম লিডারশিপ বা একাধিক ব্যক্তির সমষ্টিগত নেতৃত্বে সচেষ্ট আছি। এ দলে জেলা নেতৃত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। এরাই হবে দলের মূল চালিকা শক্তি। রেষারেষি, মারামারি, কাটাকাটি ও দোষারোপের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে স্বাধীন দেশের স্বাধীন মুক্ত মেধার রাজনীতি প্রচলনে আমরা সচেষ্ট থাকবো।

তিনি বলেন, ‘শাসন নয় সেবা’ এই মূল মন্ত্রে দলের সব নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মোটিভেট করা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দল ও সরকারকে পৃথক সত্তা হিসেবে, পৃথকভাবে বিবেচনা করা হবে। রাজনৈতিক দল লিমিটেড কোম্পানি বা পৈতৃক সম্পত্তি নয়, এ সত্য স্বীকার করে দলকে জনগণের সম্পদে পরিণত করা হবে। দলটিকে ব্যক্তি, পরিবার, গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ মুক্ত রাখা হবে। ‘কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব’ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে, সব দল ও ভিন্নমতের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আচরণ অব্যাহত রাখতে, এ দল সর্বদা সচেষ্ট থাকবে।

গণতান্ত্রিক সংস্কার পার্টির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. শাহেদা ওবায়েদ বলেন, দেশে একটা রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক শূন্যতা হলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়। ফলে মানুষের মধ্যে দুঃখ-কষ্ট নেমে আসে। দেশে বর্তমানে বৈষম্য, ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ভারসাম্য যদি ঠিক করা না যায় তাহলে দেশে বিরাট সমস্যার সৃষ্টি হবে।  

তিনি বলেন, মার্চ মাস থেকে আমরা আমাদের দলের যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা করেছি। আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির কারো সঙ্গে নেই। আমরা দেশপ্রেমিক এবং অবিতর্কিত লোকদের নিয়ে দল গঠন করতে চাই।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক পার্টির কর্মী শিক্ষিকা নাদিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আসাদুল হক, কমান্ডার সাব্বির, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. জয়নাল, মো. জাহাঙ্গীর, মিজান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৪
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।