ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সালথায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
সালথায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এসময় ১৪টি দোকান ও চারটি বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

এর আগে সোমবার রাত ১০ থেকে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে এ সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যদুনন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রব মোল্যার সঙ্গে প্রতিপক্ষের আওয়ামী লীগ নেতা মো. কাইয়ুম মোল্যার বিরোধ চলছিল। এরই মধ্যে সম্প্রতি যদুনন্দী নবকাম পল্লী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওবায়দুর রহমানকে হাতুড়িপেটা করে পদত্যাগে বাধ্য করান কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকরা। পরে শিক্ষার্থীরা ফুলের মালা দিয়ে অধ্যক্ষকে কলেজে নিয়ে আসেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি সমর্থন দেন আব্দুর রব মোল্যা ও তার সমর্থকরা।

এতে উভয় গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। এরই জেরে সোমবার রাত ১০টার দিকে কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকরা যদুনন্দী বাজারে এসে আব্দুর রব মোল্যার সমর্থক ফিরোজ মোল্যা ও কাইয়ুম মোল্যা নামে দুই ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত করে এবং তাদের তিনটি দোকান ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে আব্দুর বর মোল্যার দুইশ থেকে আড়াই শতাধিক সমর্থক কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকদের ধাওয়া দিলে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

একপর্যায় প্রতিপক্ষের ধাওয়ায় কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকরা বাজার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। পরে কাইয়ুম মোল্যার সমর্থকদের অন্তত ১১টি বিভিন্ন পণ্যের দোকান ও চারটি ভাঙচুর ও লুটপাট করে রব মোল্যার সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ফিরোজ মোল্যা ও কাইয়ুম মোল্যাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে আব্দুর রব মোল্যা বলেন, ১০-১২টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে কাইয়ুম মোল্যা ও তার সমর্থকরা অতর্কিতভাবে আমার তিন সমর্থককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে এবং তাদের দোকানপাটও ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে আমার সমর্থকরা ওদের ধাওয়া দিয়ে এলাকা ছাড়া করে দেয়। এ সময় কাইয়ুমের কয়েকজন সমর্থকের দোকানে হামলা করা হয়েছে, এটা ঠিক। তবে ওরা আগে হামলা না করলে এমন ঘটনা ঘটতো না।

তবে কাইয়ুম মোল্যা বলেন, আব্দুর রব মোল্যার সমর্থকদের একটা দোকানও ভাঙচুর করা হয়নি। এমনকি কাউকে মারধরও করা হয়নি। এটা তারা মিথ্যা অভিযোগ করছে। বরং অতর্কিতভাবে রব মোল্যা ও সাজ্জাদ খন্দকারের সমর্থকরা আমার সমর্থকদের ১১টি দোকান ও চারটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে এবং দোকানে থাকা মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।  

ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যদুনন্দী বাজারে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনার পর থেকে ওই বাজারে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সেনাবাহিনী দুইজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকালে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ ঘটনায় এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।