ঢাকা: ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, চট্টগ্রামে গতকাল একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা একটি সংগঠনের অভ্যুদয় দেখছি খুব অল্প কিছুদিন ধরে।
তিনি বলেছেন, এই সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা সবাই যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মী তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক সেজে এই এই সংগঠনটির মধ্যে ঢুকে সারাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। এদের একজন নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এই কারণে ভারত থেকে তার মুক্তির দাবি করা হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে মুক্তি দাবি করা হয়েছে। এগুলো কীসের আলামত?
বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ২৪’র ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে মিরপুরে শহীদ পরিবারগুলোর সাথে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের প্রায় দুই হাজারের মতো বাচ্চা ছেলেদেরকে গুলি করা হয়েছে, অনেককে হত্যা করা হয়েছে, কই তখন তো ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর তো একটা স্টেটমেন্ট দেয়নি? শেখ হাসিনার এই ভয়ংকর নিপীড়নের জন্য এই রক্তক্ষরণের জন্য একটা স্টেটমেন্ট তো দেননি? একটা বিবৃতি তো দেননি? আজকে যখন সরকার এবং সব মানুষ বুঝতে পারছে কোনো একটা ষড়যন্ত্র চক্রান্তের খেলা চলছে, কোনো কিছু একটা পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এটাতো একটি সূর্যের আলোর মতো একেবারে পরিষ্কার। এই সংকটটা কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হচ্ছে। হঠাৎ বিভাগীয় শহরগুলোতে নেমে পড়ছেন দাবি জানাচ্ছেন কই শেখ হাসিনার সময় তো দাবি জানাননি!
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো থামছে না,ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন ঠিকই কিন্তু তার টাকার যে উৎস এটা এখনো তৃণমূলে অনেকের কাছে নানাভাবে রয়েছে ওই টাকাগুলোই খরচ করে তারা এলাকার পর এলাকা অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছে।
রিজভী বলেন, আমরা বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিষ্টান পাশাপাশি শান্তিতে সহাবস্থানে দীর্ঘদিন বাস করছি। আজকে কেন পরিকল্পিতভাবে বলা হচ্ছে এখানে হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরাট অংশ এর মধ্যে নেই তারাও বুঝতে পারছে কোনো ষড়যন্ত্র চক্রান্ত চলছে। কিন্তু তারা নেমে একজন আইনজীবীকে পর্যন্ত হত্যা করার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। এর জন্য ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর কোনো বিবৃতি দিলেন না। বিবৃতি দিলেন যে, অস্থিতিশীলতা তৈরি করার কারণে চিন্ময় নামে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার জন্য। সে তো বাংলাদেশের নাগরিক, তার প্রতি যদি সরকার অন্যায় করে তাহলে বাংলাদেশের সরকার তাদের লোকজন তারা সেখানে দাবি তুলতে পারেন তাদের দাবি এখান থেকে হবে কেন বাহিরের একটি দেশ থেকে এই ধরনের প্রতিবাদ আসছে। এগুলো তো সব রহস্যজনক বিষয়। বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে তারা মনে হয় বিশ্বাস করতে চায় না। তারা মনে করে দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে বাংলাদেশ সেভাবে চলবে। এটা ১৮ কোটি মানুষের দেশ এই দেশ এভাবে চলতে পারে না। পার্শ্ববর্তী দেশের পলিসি মেকাররা এটা যেন ভুলে না যায়।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র উত্তোরণের যে প্রক্রিয়া চলছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে যে দেশ যাচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে অবাধ সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নিশ্চিত করার যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এটাকে মনে হয় অনেকেই সহ্য করতে পারছে না। এই ধরনের পরিকল্পিত মাস্টার প্ল্যান বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত রাজনৈতিক সচেতন সংগ্রামী এবং নিজের জীবন উৎসর্গ করে স্বাধীনতা রক্ষা করতে জানে, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে জানে এবং গণতন্ত্রকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করতে জানে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফউদ্দিন বকুল,সংগঠনের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন,সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন,যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
টিএ/এসএএইচ