বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজানুজ্জামান রিমান্ড শুনানি শেষে সাদিককে অস্ত্র মামলায় দুই দিন এবং পর্নোগ্রাফি মামলায় সাদিক ও আকাশকে একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে উচ্চেস্বরে কাঁদছিলেন ও কালেমা পড়ছিলেন।
জানা যায়, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর সৈয়দ সাদিকুর রহমান রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে তোলেন সন্ত্রাসী বাহিনী। সাদিকের নেতৃত্বে এ বাহিনী অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে ঘটাতে থাকে একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
গত ৩১ অক্টোবর জেলার কালিগঞ্জের পাওখালিতে অস্ত্র ঠেকিয়ে বিকাশ এজেন্টের ২৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে সাদিক ও তার বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনার পর পুলিশ ছিনতাইয়ের রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় সাদিকের দেহরক্ষী সাইফুল ও দীপ। সেই থেকে পলাতক ছিলেন সাদিক।
এদিকে, ছিনতাইয়ের রহস্য উন্মোচন হতে না হতেই বেরিয়ে আসে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সরকারি কর্মকর্তাসহ ব্যবসায়ীদের নগ্ন ভিডিও করে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার রহস্য। এর পরপরই ঢাকা থেকে গ্রেফতার হয় সাদিক ও এর মূল হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত সুমাইয়া শিমু নামে সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের এক নারী। তার আগেই গ্রেফতার হয় তাদের আরেক সহযোগী আকাশ ইসালামসহ সাদিক বাহিনীর আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী।
সাদিক, আকাশ ও শিমুসহ গ্রেফতার হওয়া সবাই একে একে ছিনতাই ও প্রতারণার বিষয়ে নিজেদের কুকর্মের বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তাদের জবানবন্দিতে বেরিয়ে আসে লোমহর্ষক নানা ঘটনার কথা। আর এই চক্রের সহযোগী হিসেবে প্রকাশ করে সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি, সাংবাদিক তুহিন, যুবলীগ নেতা তুহিনসহ কয়েকজনের নাম।
এই সন্ত্রাসী বাহিনী ইতোমধ্যে সাতক্ষীরার অন্তত ৭০ জনকে এমন ব্লাক মেইলের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় পরপরই সাদিক বাহিনী হত্যা করে শহরের মুন্সীপাড়ার সোহাগ নামে এক যুবককে। একই সঙ্গে পৌরসভার শিবতলায় জমি দখল করে গেলে সাদিকের পিস্তলে গুলিবিদ্ধ হয় তারই এক সহযোগী ছাত্রলীগ নেতা ফারাবি।
কিন্তু একজন জনপ্রতিনিধির নিকটাত্মীয় হওয়ায় বারবারই পার পেয়ে যায় সাদিক ও তার সহযোগীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
এসএইচ