ফরিদপুর: ‘সন্ত্রাস, হাতুড়ি বাহিনী, হেলমেট বাহিনী আবারও নতুন করে ফরিদপুরবাসীর ওপর চেপে বসেছে। এদের উৎখাত না করতে পারলে ফরিদপুরের মানুষের জীবন আগের চেয়ে আরো দুর্বিষহ হবে।
১২ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে সামনে রেখে বিশাল মিছিল শেষে গণসমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক নেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপুল ঘোষ।
জেলা আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে বিপুল ঘোষ সভাপতি প্রার্থী। এ উপলক্ষে শহরের গোয়ালচামটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে থেকে রোববার (৮ মে) বিকেল ৪টার দিকে একটি মিছিল বের করা হয়। এরপর রাস্তার মোড় হয়ে মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ করে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিপুল ঘোষ বলেন, বিগত দিনগুলোতে আমরা ফরিদপুরের মানুষ অনেক কষ্ট-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মুক্ত করেছেন। ১২ তারিখের সম্মেলনে জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে চাইবেন তাকেই সভাপতি-সেক্রেটারি করবেন। এখন প্রশ্নটা হলো, জননেত্রী শেখ হাসিনাই যদি নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন তাহলে আপনাদের মহড়ার দরকারটা কী?
তিনি বলেন, আমরাতো মহড়া দেই না। কোন জায়গায় আমার একটা পোস্টার নাই, একটা ব্যানার নাই। ৫৩ বছর রাজনীতি করি। একাত্তর মাস জেল খাটছি। ১৭ বার জেলে গেছি আওয়ামী লীগ করার কারণে। একবারও ব্যক্তিগত কোনো কারণে আমি জেলে যাইনি।
তিনি আরো বলেন, সব জায়গাই একটা প্রতিপক্ষ থাকে। আওয়ামী লীগ একটা বৃহত্তম দল তাই স্বাভাবিকভাবে অনেক লোক প্রার্থী হতে পারে। রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকাটাই সৌন্দর্য। আপনারা অনেকে প্রার্থী হয়েছেন। আমি তাদের একবারও বলি না আপনারা কেনো আমার বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলেন? কিন্তু আমার লোক, আমার সমর্থক, শেখ হাসিনার লোক; তাদের যদি আপনারা মারেন তা হইলে কিন্তু আপনারা পালানোর জায়গা খুঁজে পাবেন না। এই জনগণ টাকায় আসে না। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভালবাসায় আসে।
তিনি নিজ দলের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা একাই সবকিছু হইতে চান, তা হইলে অন্যরা কি করবে? দুইদিন আগে আগে আপনারা চেয়ারম্যান (মেয়র) হইলেন। এখন আপনে আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি হবার চান। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নজন দিয়ে ভয় দেখান। বিভিন্ন জনের বিরুদ্ধে বিভিন্নরকম কথা বলেন। অথচ উনার মনোনয়ন দেয়ার জন্য দলীয় প্রধানের কাছে আমার সুপারিশ কঠিনভাবে ছিল।
বিপুল ঘোষ দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর বিশ্বাস রাখার জন্য দলীয় নেতাদের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব ব্যক্তিগত যারা কর্মকর্তা তারা ফরিদপুরে রেকি করে গেছেন। কে সভাপতি, কে সেক্রেটারি হইলে ভালো হয়? যাকে উনি ভালো মনে করবেন তাকেই আমরা নেতা হিসেবে মেনে নেবো। কিন্তু আপনারা যদি জোর করে কিছু করতে চেষ্টা করেন তাহলে আপনাদের কপালে দুর্ভাগ্য আছে। কোন কারণে যদি সাধারণ মানুষগুলো ক্ষেপে যায়, তাহলে এদের হাত থেকে আপনারা বাঁচতে পারবেন না।
এই প্রবীণ নেতা বলেন, সম্মেলনের দিন কেন্দ্রের নেতরা উপস্থিত থাকবেন। যা কিছু বলার সেদিনই বলবো। জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের নাম লিখে খামে ভরে আঠা দিয়ে আটকে দলের সেক্রেটারির কাছে দিবেন। তিনি নিজের জানেন না এই খামের মধ্যে কার নাম লেখা আছে।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই মিছিলে যতো লোক আসছে তারচেয়ে বেশি লোক বাগানে বসা ছিলো। কিন্তু গরমের কারণে তারা আসতে পারেন নাই।
ফরিদপুরের কোতয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, শহর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. মনিরুল হাসান মিঠু, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম সেলিম, আওয়ামীলীগ নেতা আশরাফুজ্জামান মুরাদ, অ্যাডভোকেট সরদার আওয়াল হাসান, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তৌহিদুল আলম পুচ্চি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪১ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২২
এনটি