সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য শিল্পপতি আব্দুল মমিন মণ্ডল এর আগে কখনো আওয়ামী লীগ বা এর কোনো অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পদে ছিলেন না। এবার তিনি বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন।
এজন্য বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সমর্থকরা দুই হাজারেরও বেশি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ সময় শোভাযাত্রার কারণে বেলকুচি-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক পুরোপুরি মোটরসাইকেলের দখলে চলে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহনগুলো।
তারা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার ফিরোজ ভুঁইয়ার হাতে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এমপি মমিন মণ্ডলের পক্ষে মনোনয়পত্র জমা দিতে আসেন বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেলখোশ আলী প্রামানিক, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সরকার, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাজ উদ্দিন আহমেদ, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সিরাজসহ সংগঠনের দুটি উপজেলা ও একটি থানা কমিটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী।
এ সময় দলীয় নেতারা বলেন, দুই হাজারেরও বেশি মোটরসাইকেল নিয়ে বেলকুচি থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে তারা এমপি মমিন মণ্ডলের মনোনয়ন জমা দিতে এসেছেন। মোটরসাইকেলগুলো সিরাজগঞ্জ শহরের শহীদ শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে রাখা হয়েছে। আর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য কিছু মোটরসাইকেল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসেছেন। এছাড়াও কয়েকটি মাইক্রোবাসেও নেতাকর্মীরা এসেছেন।
বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক সরকার বলেন, আমরা প্রায় আড়াই হাজার মোটরসাইকেল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছি। নিজ নিজ উদ্যোগে নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছেন।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, আব্দুল মমিন মণ্ডল এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সংগঠন গোছাতে কাজ করেছেন। এ কারণে তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন।
এমপি মমিন মণ্ডল আগে দলের কোনো পদে ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নে- এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, তিনি (মমিন মণ্ডল) কখনো ছাত্রলীগ করেছেন কিনা সেটা জানা নেই। তবে এর আগে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও তিনি দলের এমপি। তিনি সভাপতি প্রার্থী হতেই পারেন।
প্রসঙ্গত, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে মণ্ডল গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রয়াত আব্দুল মজিদ মণ্ডল আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে মজিদ মণ্ডল অসুস্থ থাকায় তার বড় ছেলে আব্দুল মমিন মণ্ডল দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার বাবা মজিদ মণ্ডল ২০১৪ সালে এমপি হওয়ার পর এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগেরও সভাপতি নির্বাচিত হন। ওই কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় মমিন মণ্ডলের। তিনি এনায়েতপুর থানার বাসিন্দা হলেও নেতৃত্ব নিজ দখলে রাখতে বেলকুচিতে বাড়ি নির্মাণ করেছেন বলে কথিত রয়েছে।
আগামী ২৩ মে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন। তার সমর্থকরা বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে মনোনয়ন জমা দেন।
এ ব্যাপারে জানতে আব্দুল মমিন মণ্ডল এমপির মোবাইল ফোনে একাধিকবার দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০২২
এমএমজেড