ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র দলের নেতাকর্মকীদের ওপর ছাত্র লীগের হামলার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আঘাত এলে এখন থেকে পাল্টা আঘাত করা হবে।
বুধবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক মানববন্ধনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা যা করেছে, তারা মার খেয়েছে, সে জন্য আমরা মর্মাহত। কিন্তু তাদের আমরা ধন্যবাদ জানাই, সংগ্রামী অভিনন্দন জানাই যে, তারা পাল্টা প্রতিরোধ করছে, পাল্টা মার দিয়েছে। এখন জায়গায় অজায়গায় যেখানেই হোক, যেখানে আঘাত আসবে সেখানে পাল্টা আঘাত দিতে হবে। এই আঘাত দেওয়ার জন্য আমাদের সশরীরে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের মনে করতে হবে, আমরা দেশটাকে যুদ্ধ করে স্বাধীন করেছি অন্যের হাতে মার খাওয়ার জন্য না। আমাদের মার দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যদি আমরা দেশ স্বাধীন করতে পারি তাহলে আমাদের দেশে যারা চোখ রাঙায়, পোশাক পড়ে লাফালাফি করে তাদের ব্যবস্থা করতে বেশি সময় লাগবে না। আমরা তাদের পরাস্ত করতে পারবো। আজকে ঢাকা শহরে দেখলাম মহিলা দল নয়া পল্টনে কর্মসূচি করছে….। যুদ্ধ যদি করতে চান তাহলে অলিতে গলিতে যুদ্ধ শুরু হবে। সরকারকে বলব, আপনাদের যত শক্তি আছে, যত মারতে পারেন, আমরা মরার জন্য প্রস্তুত। জেলখানা আমাদের জন্য বিষয়বস্তু না। জেলখাটা আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে, জেলের ভয় দেখিয়ে আমাদের কোনো লাভ হবে না।
পদ্মা সেতুর ওপর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ‘টুস’ করে ফেলে দেওয়া হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই মানবন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আপনি (শেখ হাসিনা) এই ধরনের একটা হুমকি দিয়েছেন। আর আপনার দলের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বিএনপি বুঝতে ভুল করছে, আমরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছি। বাংলা কথা সবাই বোঝে—সেটা চিটাগংয়ের বাংলা হোক, নোয়াখালীর বাংলা হোক অথবা গোপালগঞ্জের বাংলা হোক। সুতরাং এই বাংলা শব্দ বুঝতে কারো বিভ্রান্ত হওয়ার কথা না। আমি দয়া করে বলব, জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। আর সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ রাখতে পারবেন, খবর বন্ধ রাখতে পারবেন। কোনো ঘটনা ঘটলে তা বন্ধ রাখার ক্ষমতা আপনাদের হাতে নেই। আপনাদের যেতে হবেই।
তিনি বলেন, আপনি (শেখ হাসিনা) যে কথা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতুর ওপর থেকে ফেলে দেবেন। এটা ক্রিমিনাল কোর্টে অ্যাটেম্প টু মার্ডার। কারণ আপনি হুকুম ঘোষণা করেছেন। এ জন্য আপনাকে মামলা খেতে হবে। আর পোষ্য আদালত এই মামলা নেবে না। যদিও আপনার কোনো থানা এই মামলা নেবে না, এটা আমরা জানি। কিন্তু জনগণের আদালতে মামলাটা অবশ্যই গ্রহণ হবে, সেই বিচারটা জনগণের আদালতে হবে যদি আপনি দেশে থাকেন।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন, মহানগর বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবীসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ