শরীয়তপুর: পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম (এমপি) বলেছেন, জনগণের আস্থা অর্জন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। অথচ বিএনপি দেশ ও গণতন্ত্র ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
রবিবার (২৯ মে) বিকালে শরীয়তপুরের সখিপুর থানা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বর্ধিত সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলো। ক্যান্টনমেন্টে বসে একাত্তর এবং পঁচাত্তরের ঘাতক-খুনিদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি গঠন করেছিল। ক্ষমতায় থাকতে অনেক নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে। দেশকে পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। তার মৃত্যুর পর খালেদা জিয়াও একইভাবে নানা অকৌশলে ক্ষমতায় এসেছিল। তারা কখনোই সঠিকভাবে আসেওনি আর ক্ষমতা হস্তান্তরও করেনি।
তিনি আরও বলেন, বিদেশে পলাতক থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানও গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা আবার পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘটানোর স্বপ্নে বিভোর হয়েছে। জনগণ বারবার বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব আওয়ামী লীগকে দিয়েছে। কারণ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ; বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতেই নিরাপদ আর কারো কাছে নয়।
তিনি আরও এনামুল হক শামীম বলেন, পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খান ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ওই আইয়ুবের পদাঙ্ক অনুসরণ করে জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া ছাত্রদের অস্ত্র দিয়েছিলেন।
আর ১৯৯৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শাপলা চত্বরে ছাত্রদের হাতে বই-খাতা–কলম তুলে দিয়ে বলেছিলেন, ‘অস্ত্র নয় বই কাগজ কলমই হচ্ছে ছাত্রদের প্রকৃত হাতিয়ার। গত ১৩ বছরে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি নেই, অস্ত্রের মহড়া নেই, সেশন জট নেই। বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়া শেখ হাসিনার সরকারের অনন্য কৃতিত্ব। এই অর্জনকে নসাৎ করতে বিএনপি তাদের অছাত্র-বিবাহিত-ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে গঠিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে উত্তপ্ত করতে চায়। তারা দেশে আবারও অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। তবে এটা সম্ভব হবে না। বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনপির উদ্দেশ্য উপমন্ত্রী বলেন, কিভাবে ভোট ছাড়া নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেন। কোনো বিদেশি প্রভুরা আর ক্ষমতায় বসিয়ে দিতে পারবে না। ক্ষমতায় যেতে জনগণের দ্বারে দ্বারে যান। অতীতের কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান। আর ক্ষমতায় আসার প্রক্রিয়া হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবার্চনে অংশগ্রহণ করা। এছাড়া কোনো পন্থায় ক্ষমতার সুযোগ নাই। নিজের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য হলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে যদি নির্বাচনে আসতে হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। বিএনপি মূলত নির্বাচন চায় না, তারা জানে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে পারবে না। বিএনপিকে এ দেশের জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এ দেশের জনগণ একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই ঐক্যবদ্ধ। তাই আগামী নির্বাচনেও জনগণের রায় নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় আসবেন।
সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হুমায়ুন কবির মোল্যার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মানিক সরকারের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম সরদার, লেহাজ উদ্দিন বেপারী, সহ-সভাপতি জিতু মিয়া বেপারী, কোহিনুর সুলতানা দোলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মানিক সরদার প্রমূখ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
এনএইচআর