ঢাকা, শনিবার, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জিয়া-খালেদার দুঃশাসনের কথা মানুষ ভুলে নাই: শামীম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
জিয়া-খালেদার দুঃশাসনের কথা মানুষ ভুলে নাই: শামীম

শরীয়তপুর: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, জিয়া বন্দুকের নলের মুখে পেছনের দরজা দিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি বিচারপতি সায়েমকে বন্দুকের নল ঠেকিয়ে তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করতে বাধ্য করেছিলেন।

 

জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে রাজাকার ও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত হত্যাকারীদের পুনর্বাসন করে এবং রাষ্ট্রের উচ্চ পদে আসীন করেছিলেন। অনেক দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেছেন। নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য অভিনব ‘হ্যাঁ’ ‘না’ ভোট করে শতকরা ১০০ থেকে ১২০ ভাগ ভোট পান। যে নির্বাচনে জিয়া একাই প্রার্থী ছিলেন। নিজেই বিচারকদের আদালতের রায় লিখে দিতেন। দেশে হত্যা-গুম ও খুনের রাজনীতি চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুদের খুনিদের সাক্ষাৎকারই প্রমাণ করে জিয়াই বঙ্গবন্ধু হত্যার মাস্টারমাইন্ড। খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করা এখন সময়ের দাবি। জিয়াই প্রথম এদেশের ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। জিয়ার শাসনামলে এমন কোনো অপকর্ম নেই তিনি করেননি।  

তারই পদাঙ্কানুসরণ করে খালেদা জিয়াও একই কায়দায় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কারণেই অল্প কয়েকদিনের মাথায় জনরোষে তারা পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। ২০০১ সালের পর খালেদা জিয়া হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করে, গুম করেছেন, অনেককে পঙ্গু করেছেন। জাতীয় নেতা শাহ এমএস কিবরিয়া, আহসানউল্যাহ মাস্টারসহ অনেক জাতীয় নেতাকে হত্যা করেছেন। ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছেন। তাদের নির্মম নির্যাতনে অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়। ওই সময় দেশে হত্যা, গুম, ধর্ষণ বেড়ে গিয়েছিল। দেশের সব প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে পরিণত হয়েছিল।  

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের নামেও প্লেট চুরির মামলা দিয়েছিলেন। তাদের নির্যাতনের কথা মনে পড়লে আজও অনেকের গাঁ শিউরে ওঠে। এদেশের কোনো সুষ্ঠু নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে নাই। কারণ, জিয়া-খালেদার দুঃশাসনের কথা মানুষ ভুলে নাই। তারা যদি আওয়ামী লীগের মতো এক নাগারে ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকতো তাহলে আওয়ামী লীগের একজন নেতাকর্মীকেও বাঁচিয়ে রাখতো কিনা তা নিয়েই সন্দেহ আছে।

সোমবার (৩০ মে) বিকেলে শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরকুমারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বর্ধিত সভা এবং সদস্য নবায়ন ও সংগ্রহ কর্মসূচিতে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এনামুল হক শামীম বলেন, ক্ষমতায় থাকতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশের সম্পদ লুটেপুটে খেয়েছেন, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করেছেন, বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে হত্যা করে, গুম করেছেন, অনেককে পঙ্গু করেছেন। আর ক্ষমতায় না থাকতে পেয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে আগুন সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছেন। তাই দেশের মানুষ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বিএনপি এখন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে নামসর্বস্ব দলে পরিণত হয়েছে। আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে তারা দেশ-বিদেশে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।  

এদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তাদের আগুন সন্ত্রাসী ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের নয় বারবার আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় চায়। কারণ, আওয়ামী লীগ শক্তিশালী হলে জননেত্রী শেখ হাসিনা শক্তিশালী হয়, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শক্তিশালী হলে বাংলাদেশ শক্তিশালী হয়।  

এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাই আগামী নির্বাচনেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করতে হবে।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি মূলত জানে, তারা নির্বাচনে এলেও ক্ষমতায় আসবে না। তারা তো জানেই খালেদা ও তারেক রহমান নির্বাচনের অযোগ্য তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাই তারা মাঝে মধ্যেই নতুন ফর্মূলা নিয়ে হাজির হয়। ক্ষমতায় আসতে হলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিদেশি প্রভুদের কাছে ধরনা দিয়ে লাভ নেই। আর আন্দোলনের দোহাই দিয়ে লাভ নেই।  

চরকুমারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুর রহমান মোল্যার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান আক্তার সরদারের সঞ্চালনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সখিপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির মোল্যা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, জেলার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক কাওসার আহমেদ তকি, থানার সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মানিক সরকার, সহ-সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক মোল্যা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মানিক সরদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।