ঢাকা: অসৎ উদ্দেশ্যে একটি সুযোগ সন্ধানী ও স্বার্থান্বেষী মহল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) নাম ব্যবহার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
মঙ্গলবার (৭ জুন) বেলা ১১টায় রাজধানীর এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট ড. আওরঙ্গজেব বেলাল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের গণমানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ২০০৬ সালে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। বর্তমানে কর্নেল (অব.) অলি আহমদ প্রেসিডেন্ট ও ড. রেদোয়ান আহমেদ মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। The Representation Ad The People Order, ১৯৭২ এর Chapter VIA এর বিধান অনুযায়ী দলের নিবন্ধনের জন্য সব শর্তাদি পূরণ সাপেক্ষে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-কে রাজনৈতিক দলের ১ নম্বর ক্রমিকে নিবন্ধন প্রদান করে, ‘ছাতা’ প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। বিগত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন আসনে ‘ছাতা’ প্রতীকে একাধিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করে উক্ত নির্বাচনে কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম মহান জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এলডিপি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তৃণমূল থেকে থানা, জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে গণতান্ত্রিক পন্থায় সদস্য সংগ্রহ, কমিটি গঠন, মিটিং-মিছিল, বর্ধিত সভা, সেমিনার, কাউন্সিল, নির্বাচন কমিশনে আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়া, বার্ষিক অডিট ইত্যাদিসহ জাতীয় দিবসে কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু এলডিপির বর্তমান অবস্থা, সুনাম ও অগ্রযাত্রা ব্যাহত করার লক্ষ্যে কতিপয় ষড়যন্ত্রকারী অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়ে দলটির নামে সামাজিক যোগাযোগ ও বিভিন্ন গণ মাধ্যমে অপপ্রচার চালায়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে উপরোক্ত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এলডিপির প্রাক্তন যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ কয়েকজন নেতা/কর্মী দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ, বিশেষ করে আমেরিকায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রলুব্ধ করে, প্রতারণার আশ্রয়ে এলডিপির প্যাডে প্রত্যয়নপত্র প্রদানের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে বিগত ২৬ অক্টোবর-২০১৯ তারিখে এলডিপির জাতীয় কাউন্সিলে অনুপস্থিত থেকে নির্বাচিত হতে পারেনি। পরবর্তীতে দলীয় সিদ্ধান্তে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এলডিপির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। সেই আক্রোশে ক্ষুব্ধ হয়ে, উক্ত শাহাদাত হোসেন সেলিম এলডিপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়।
তাছাড়া শারীরিক অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত কারণে সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল করিম আব্বাসী, মো. আব্দুল গনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। কতিপয় কুচক্রী মহলের সাথে শাহাদাত হোসেন সেলিম এবং দলের অন্যতম সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু তার সঙ্গীয় ফয়সালসহ-যোগসাজশে আমেরিকায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের নিকট থেকে পাটির প্যাডে সনদ দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে। এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার এলডিপি নাম ব্যবহার করে একটি কমিটি সৃজন করে।
উক্ত কমিটি সৃজনের মাধ্যমে শাহাদাত হোসেন সেলিম নিজেকে মহাসচিব উল্লেখ করে বিভিন্ন অপ-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। তারা সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে একটি নিবন্ধিত ও প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও বেআইনি কাজ করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং এলডিপি-র সুনাম ও ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতি করছে।
ষড়যন্ত্রকারী শাহাদাত হোসেন সেলিম গং কর্তৃক এলডিপির নামে যেকোনো কর্মকাণ্ড পরিচালনা সম্পূর্ণ অবৈধ। এলডিপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী ও বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের অবৈধ কর্মকাণ্ড অনতিবিলম্বে বন্ধ করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে এই দুষ্কৃতিকারীদের এলডিপির নেতা পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানাই।
এ বিষয়ে সোমবার (৬ জুন) ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত আকারে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদ মোর্শেদ, ড. নেয়ামুল বশির, যুগ্ম মহাসচিব বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
এমএইচ/ এনএইচআর