ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহে আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ওয়াকশনের ঠিকাদারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার জেরে রোববার (১২ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশাল বহর নিয়ে মহড়া দিতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন ও সম্পাদক হুমায়ন কবীর এবং তাদের নেতাকর্মীরা।
এ সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও স্থানীয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ নেতারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ জানান, ওয়াকশনের কাজ নিয়ে দ্বন্দ্বে জেলা ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে সাবেক ছাত্রলীগ ও ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এতে কেউ আহত হয়নি।
আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমান উল্লাহ জানান, গত ২৬ মে কলেজের চারটি পুরাতন ভবন ওয়াকশন দেওয়া হয়েছে। এম এস কনস্ট্রাকশনের টিটু নামে একজন ছয় লাখ ৭৮ হাজার টাকা মূল্যে কাজটি পেয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে ঠিকাদার ওই পুরাতন ভবনগুলো ভেঙে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু রোববার (১২ জুন) বিকেলে ছাত্রলীগের একটি অংশের নেতারা ওই কাজ বন্ধ করে দেয়। এ নিয়ে ঠিকাদারের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তখন ঘটনাটি পুলিশকে জানালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রাত ৯টার দিকে ফের জেলা ছাত্রলীগের নেতারা দলবল নিয়ে কলেজের সামনে এলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জানা যায়, ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের সদস্য ও আনন্দ মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মীর ওয়াহিদ ও নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ টিটু ওরফে কল্যান টিটু যৌথভাবে এই ওয়াকশনের কাজের ঠিকাদারি নিয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, এই কাজের জন্য জেলা ছাত্রলীগ তাদের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। ইতোমধ্যে তাদের দেড় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও তারা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় এলাকাবাসী ও তাদের লোকজন ক্ষিপ্ত হলে উত্তেজিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে এ সময় কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান ঠিকাদার কল্যান টিটু।
জানতে চাইলে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আল আমিন। তার দাবি, চাঁদা দাবির অভিযোগ মিথ্যা।
মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঠিকাদারের লোকজন বাজে ব্যবহার করে অস্ত্র প্রদর্শন করেছিল। পরে ঘটনাটি আমাদের জানালে রাতে সেখানে গিয়েছিলাম। এ সময় ঠিকাদারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারমুখী পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। এতে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে ছাত্রলীগের ভেতরে-বাইরে। এ ঘটনায় নগরীর কলেজ রোড এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
আরএ