ঢাকা: সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারবাহিক বৈঠক করছে বিএনপি। তারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে এলডিপি চেয়ারম্যান ড. কর্নেল অলি আহমদের মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় বৈঠক করেছে বিএনপি।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন কর্নেল অলি আহমদ ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা বলেন, যুগপৎভাবে সরকার পতন আন্দোলন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিদেশে চিকিৎসা ও দলীয় নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন।
কর্নেল অলি আহমদ বলেন, বিএনপির সঙ্গে এটা তৃতীয় মিটিং। এর আগের মিটিংয়ে মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন। আজকের মিটিংয়ে মহাসচিব ও নজরুল ইসলাম খান এসেছেন। আগেরদিন যে আলোচনা করেছি, মোটামুটি একই আলোচনা আজকেও হয়েছে। বর্তমান যে সরকার আছে তারা দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দেশের জনগণ অস্বস্তিকর পরিবেশে বসবাস করছে। কারও জানমালের নিরাপত্তা নেই। মৌলিক অধিকার নেই। ন্যায় বিচার নেই। একটা মগের মুল্লুকে আমরা বসবাস করছি। এরকম অবস্থা দেশের জনগণের জন্য কাম্য নয়। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, একটা আশা আকাঙ্খা নিয়েই আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম। এ ধরনের লুটপাট, বিদেশে টাকা পাচার, বড় বড় প্রকল্প থেকে টাকা লুট করার জন্য আমরা এই দেশ স্বাধীন করি নাই। আমরা চাই এটার অবসান হোক। এই সরকার অনেকদিন ক্ষমতায় ছিল, তাদেরও বোঝা উচিত তাদেরকে জনগণ চায় না। আমরা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশনেত্রী তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক সেনা প্রধান যিনি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন, সেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী। তার মুক্তি চাই এবং অনতিবিলম্বে তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক, সেটাও আমরা এই অবৈধ সরকারের কাছে দাবি করছি। এছাড়া যেসব রাজনৈতিক বন্দিরা জেলে আছে তাদের মুক্তি চাই এবং যেসব মিথ্যা মামলা আছে তা প্রত্যাহার চাই। আমি আবারও বলবো, বেগম জিয়ার মুক্তি, নেতাকর্মীদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এই সরকারের পতন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দলের সিদ্ধান্ত হলো, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করা এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ বিষয়ে আমরা একমত। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। সব রাজনৈতিক দলেল সঙ্গে আলোচনা করছি।
তিনি বলেণ, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে কারণ আমরা বিশ্বাস করি, এই নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে কখনও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এটা বুধবার সিলেটে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে যুগপৎভাবে একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবো। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।
এসময় এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম, ড. নেয়ামুল বশির, ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, প্রিন্সিপাল সাকলাইন খান, সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০২২
এমএইচ