ঢাকা: বিএনপির নেতারা সিলেটের বন্যার্তদের পাশে না দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, তারা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ায়নি।
সোমবার (২০ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়োর সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, কোনো দুর্যোগ-দুর্বিপাকে আমাদের নেত্রী নির্ঘুম রাত কাটান। আমাদের নেতাকর্মীরা একদিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন আর অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে, এখানে নয়াপল্টনে বসে বা গুলশানে বিএনপির একটি কার্যালয় আছে সেখানে বসে, প্রেসক্লাবে বসে বিএনপির নেতারা নানা কথা বলছেন। রাজনীতিটা তো মানুষের কল্যাণের জন্য, দেশ ও মানবসেবার জন্য। কিন্তু সেটি না করে এখানে বসে তারা বাগাড়ম্বর করছেন। দুর্গতদের পাশে তারা দাঁড়াননি, দাঁড়ানোর কোনো নির্দেশনাও নেই তাদের দলের পক্ষ থেকে। অথচ আমাদের নেত্রী সাথে সাথে নির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি আমাদেরও পার্সোনালি নানা নির্দেশনা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার যে ব্যবস্থা নিয়েছে, আমাদের দলের একজন নেতা ছাড়া কেউ মৃত্যুবরণ করেননি। এটিই প্রমাণ করে যে, আমাদের দল পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা তো পাশে দাঁড়াননি এখানে বসে বাগাড়ম্বর করেন। ভাষণ দেন।
মন্ত্রী বলেন, একদিনে এক হাজার মিলিলিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে প্রশাসনের সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে নির্দেশ দেন। তিনি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও নির্দেশ দিয়েছেন বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা নিজেরাই বন্যায় প্লাবিত, তাদেরও ঘরবাড়ি ডুবেছে, এরপরেও প্রশাসনের পাশাপাশি তারা বন্যার্তদের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ছাত্রলীগের এক নেতা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে মৃত্যুবরণও করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই কোনো দুর্যোগ হয়েছে, তিনি সকলের আগে ছুটে গিয়েছেন। ’৯১ ঘূর্ণিঝড়ের সময় খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায়। শুধু তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যর্থতার জন্য চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে থাকা ১০-১২টি উড়োজাহাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এগুলো বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজ। এগুলোকে উড়িয়ে ঢাকায় নিয়ে এলেই হতো। জাহাজগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে না নেওয়ায় অনেকগুলো তখন রাস্তায় উঠে গিয়েছিল। যখন খালেদা জিয়াকে প্রশ্ন করা হলো, আমি কী ভাষা ব্যবহার করবো জানি না। তিনি সংসদে বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা তত মানুষ মরে নাই!
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু তাদের জন্য তো একটি যন্ত্রণা, জ্বালার বিষয়। পদ্মা সেতু হোক তারা চায় নাই। তাই এটা হলে একটা জ্বালা, আর উদ্বোধন হলে তো আরও বড় জ্বালা। সে জ্বালা থেকেই কথা বলেন। পদ্মা সেতু উদ্বোধনে সরকার কোনো উৎসব করছে না। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান করছে। যেহতু এটি নির্মিত হওয়ায় এটি উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ আজ উল্লসিত। সমগ্র দেশের মানুষ এটিতে শুধু একটি সেতু হিসেবে নেয়নি। এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক। এখানে একটি জনসভা হবে আর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। তারা চায় না পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হোক। তাই এটিকে বানচাল করতে নানা পরিকল্পনা করেছিল, এর অনেকগুলো নস্যাৎ করা হয়েছে, আর কিছু কিছু তারা করতে পেরেছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন সিলেট, উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি এরই মধ্যে মধ্যাঞ্চলে এসেছে। এটি স্বাভাবিকভাবে দক্ষিণাঞ্চলে যাবে। খোদা না করুক যদি ভবিষ্যতে এরকম কোনো পরিস্থিতি যদি সৃষ্টি হয় তাহলে তো আমাদের সেটা মোকাবিলা করতে পদ্মা সেতু সহায়ক হবে। এ জন্যই পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়া দরকার। ওনারা আসলে এটা চায় না। মনে আছে খালেদা জিয়া বলেছিল, আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতু করতে পারবে না, পারবে না, পারবে না। আবার বলেছিল, বানালে সেটি জোরাতালি দিয়ে হবে। এটি তো বিল্ডিংয়ের ছাদ না যে একবারে ঢালাই দিয়ে বানাবে। এটা ধীরে ধীরেই বানাতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ