ঢাকা: দেশে এখন দুঃসময় চলছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তারা সরকারি জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, পঙ্গু হচ্ছেন, অথবা চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছেন।
শনিবার (২৫ জুন) জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীসহ ভিন্ন মত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক থেমে থাকছে না, বরং সরকারের জুলুমের গতি পূর্বের মতোই চলমান আছে। জাতির সব অর্জন ও এগিয়ে যাওয়া এখন অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছে। জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের ওপর সর্বোচ্চ আঘাত হানা হচ্ছে। এই নৈরাজ্যের অমানিশা আমাদের দুরীভূত করতেই হবে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে আমি বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা। যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বৈরশাসক ও নিষ্ঠুর একনায়ক এবং একদলীয় শাসনের দ্বারা মানুষ নির্যাতিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। এখনও বিশ্বব্যাপী কোনো না কোনো অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে সংঘাত চলছে।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের ওপর চালাচ্ছে নির্যাতন। রাজনৈতিক ভিন্ন মতের ওপর অসহিষ্ণু শাসকরা চালাচ্ছে নির্দয় অত্যাচার। বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাই হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর প্রধান অস্ত্র। বিভিন্ন অভিযানের নামে সারাদেশে বেআইনি হত্যার হিড়িক পড়ে গেছে। আর এসব অভিযানে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের মানুষেদেরও বেছে বেছে হত্যা করা হয়েছে। দেশে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেহেতু জনগণের কাছে সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই, সেহেতু গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় অপশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে হুমকি ও ভয় দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে কব্জা করার অপচেষ্টা চলছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন সম্পূর্ণরুপে বিপন্ন।
তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট মামলায় প্রতিহিংসামূলক সাজা দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। দেশনেত্রী ভীষণ অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও সরকার তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। সুচিকিৎসার অভাবে তার জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়েছে। আমি আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
এমএইচ/এএটি