ঢাকা: ‘শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই অবস্থায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
রোববার (১৭ জুলাই) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) লিখিত আকারে এ শঙ্কার কথা জানায়।
বিএনএফ প্রধান আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ জন্মলগ্ন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশেষ করে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে অদ্যাবধি একইভাবে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। শুরু থেকেই স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মোকাবেলা করতে হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে রাজনীতির হিসাবনিকাশ অনেক কঠিন হবে বলে আমাদের ধারণা।
বিএনএফ মন করছে, দেশে সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা, সংসদে শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনুপস্থিতি সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমতাবস্থায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, ইতোমধ্যে বিএনপিসহ বেশ কয়কটি দল নির্বাচন কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছে না।
অন্যদিকে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে যে সব দল ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে তাদের প্রতি ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আন্তঃদলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুসরণে পিছিয়ে আছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন পরিচালিত হয়। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করাও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব।
দলটি আরও বলেছে, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার সাংবিধানিক দায়িত্ব সরকারের। কিছু কিছু নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনো নির্বাচনই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিলো না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতপার্থক্য সুস্পষ্ট। অতীত অভিজ্ঞতায় বলে, নির্বাচন কমিশনের উপর সরকার প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
এই অবস্থায় অতীতের সব সন্দেহ-অবিশ্বাস যুক্ত হয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার দিকে দেশবাসী তাকিয়ে আছে। দেশবাসীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ এর প্রত্যাশা, নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অর্পিত দায়িত্ব পালনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট বিএনএফ সংবিধান সমুন্নত রাখতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২২
ইইউডি/এসএ