পাবনা: পাবনা বেড়া পৌরসভা এলাকার সানিলা মহল্লায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিক অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা এলাকায় চিহৃত সন্ত্রাসী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকুর ও তার ছেলে বেড়া পৌরসভার মেয়র আসিফ সামস রঞ্জন অনুসারী। সংসদ সদস্যের নির্দেশে ময়সের বাহিনীর সদস্যরা তার বাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন ও লুটপাট চালিয়েছে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছে ঘরে থাকা গৃহবধূ ও তার দুই শিশু সন্তান। হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের ঘর বাইরে থেকে আটকিয়ে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। তবে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনায় কোনো প্রাণহানি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, হামলার একমাত্র কারণ এমপি টুকুর সমর্থন না করা। এলাকার কেউ স্থানীয় সাংসদ টুকুর কথা মতো না চললে, তাদের ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। সংসদ টুকু ও তার চেলে রঞ্জন এলাকায় দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। হামলার সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদের আস্থাভাজন ও চিহৃত সন্ত্রাসী ময়ছের, বাদশা, রমজান, কালু, আলামিন, আনোয়ার, ঠান্টু, লালন, কাওসারসহ ১০-১৫ জনের একটি দল।
সে সময় তারা ঘরে থাকা নগদ সাত লাখ টাকা নিয়ে গেছে। ঘটনায় সম্পৃক্ত অগ্নিসংযোগকারীরা এ ঘটনায় থানায় মামলা করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন তারা। আতঙ্কের জনপদে পরিণত করেছেন টুকু পরিবার ও তাদের অনুসারীরা।
এদিকে দীর্ঘদিনের এই স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
তবে এই অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ছেলে বেড়া পৌর মেয়র আসিফ সামস রঞ্জনের সঙ্গে মোবাইলে ফোন করে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি কেটে দেন। আর এমপি টুকুর ফোনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পাবনা বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কী কারণে আগুন লেগেছে সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কাছে আগুন লাগার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে মামলা করা হবে। এই ঘটনায় এখনও মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
তবে পুলিশের হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, এটি সত্য নয়, আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০ মিনিটের মধ্যে সেখানে গিয়েছি। আর সব সময় সেখানে পুলিম ফোর্স রাখা হয়।
মধ্য রাতে কারা আগুন দিল সেটি তদন্ত না করে মামলা কীভাবে হবে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। আর ওই এলাকার বেশিরভাগ মানুষের নামে বিভিন্ন মামলা রয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক কারণে বা রাজনৈতিক সুভিধা নেওয়ার জন্য এ ঘটনা হয়েছে কিনা সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এসআরএস