ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সংসদের মেম্বারস ক্লাবের সেই ঘটনার যে ব্যাখ্যা দিলেন এমপি রাজী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
সংসদের মেম্বারস ক্লাবের সেই ঘটনার যে ব্যাখ্যা দিলেন এমপি রাজী রাজী মোহাম্মদ ফখরুল এমপি

ঢাকা: জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাবে গত ১৬ জুন কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভায় ‘কী ঘটেছিলো’ তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কুমিল্লা-৪ সংসদীয় আসনের সদস্য (এমপি) রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।  

রোববার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠান তিনি।

 

বিবৃতিতে এমপি রাজী বলেছেন, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমি বিব্রত। বিভিন্ন মিডিয়ায় আমার বক্তব্য না নিয়েই সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। অপ্রাসঙ্গিক কিছু ঘটনায় আমার নাম জড়ানো হচ্ছে, এগুলো উদ্দেশ্যমূলক।

‘‘দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে দেবীদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে নেতৃত্ব বাছাই ও সংগঠনকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা মোতাবেক ২১ জুলাই ২০২২, সম্মেলনের দিন নির্ধারিত হয়। কিন্তু কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও দেবিদ্বার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ শুরু থেকেই এ সম্মেলন পণ্ড করতে তৎপর ছিলেন। শুধু তাই নয়, আবুল কালাম আজাদ গত ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক রানাকে ফোন করে সম্মেলন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ভানী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মীসভা বন্ধ করতে হুমকি দেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন, ভানী ইউনিয়নে কর্মীসভায় কেউ এলে সে হাত-পা নিয়ে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে যেতে পারবে না। ’’ বলেন তিনি।  

রাজী মোহাম্মদ ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ২ জুলাই সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে ফেরার পথে উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা আমার গাড়ি কুমিল্লায় অবরোধ করে রাখে। এসময় আমার সঙ্গে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং দেবিদ্বার থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মনিরুজ্জামান মাস্টারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হুমকি দেওয়া হয়।

১৬ জুনের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এমপি রাজী বলেন, গত ১৬ জুন জাতীয় সংসদের মেম্বারস ক্লাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা সুন্দরভাবে শেষ হওয়ার পর ব্রিফিংও শেষ, ঠিক এমন সময় এলাহাবাদ ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পূর্ব-পরিকল্পনা অনুযায়ী উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়। তখন আমি সবাইকে শান্ত হতে বলি। এ সময় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ আমাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে গালি-গালাজ (যা প্রকাশ যোগ্য নয়) করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আক্রমণের জন্য তেড়ে আসেন। অল্পের জন্য বড় আঘাত থেকে রক্ষা পাই। এমতাবস্থায় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা আমাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন তাকে শান্ত করতে গেলে তার বুকে ধাক্কা দেন। যার সিসিটিভি ফুটেজ এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের হস্তক্ষেপে আবুল কালাম আজাদ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।  

বিবৃতিতে তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার এককভাবে ফেসবুকে এলাহাবাদ কমিটি ঘোষণা করলে তৃণমূলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমাদের সবার অভিভাবক। তার ওপর জেলার সাধারণ সম্পাদক রওশন আলী মাস্টার ও আবুল কালাম আজাদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি এবং পরবর্তীতে শারীরিক নির্যাতন অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। পাশাপাশি সংসদ ভবনের অভ্যন্তরে একজন আইন প্রণেতার প্রতি আক্রমণ শুধু ন্যাক্কারজনক নয়, দেশের সব সংসদ সদস্যকে অবমাননার সামিল।

সেদিন সংসদ ভবনের এলডি হলে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে তদন্তপূর্বক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল।

এর আগে সংসদ ভবনের এলডি হলে সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতাহাতি শিরোনামে একটি প্রতিবেদন দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এমএমআই/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।