ঢাকা: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের জন্য একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার অপরিহার্য বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক।
রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।
ইবরাহিম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যতীত এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের মধ্যে আলোচনা তথা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা একান্তই কাম্য। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট মন্তব্য। বক্তব্য তথা ভাষাটা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যানের নয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ নামে স্বনামধন্য পত্রিকার চার নম্বর পৃষ্ঠায়, একই পত্রিকার সম্পাদক নঈম নিজাম কর্তৃক লিখিত কলাম থেকে উদ্বৃত: জানি একজন টি এন সেশান কোনো দিন পাবে না বাংলাদেশ। প্রত্যাশাও করি না। কিন্তু বাস্তবতা আড়াল করা যায় না। একটি গ্রহণযোগ্য সর্বজনীন অংশগ্রহণের নির্বাচন দরকার। কীভাবে সে নির্বাচন হবে ভাবতে হবে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক লুটেরাদের আখ্যান বর্ণনায় বছর পার হয়ে যাবে। দুর্নীতির এভারেস্ট চড়ার সময় কই? কত খাতের দুর্নীতির কথা বলবেন আর শুনবেন? এত অন্যায়, এত দুর্নীতি, এত অবক্ষয়, এত অনিয়ম শুনতে শুনতে আমরা নির্জীব জাতিতে পরিণত হয়েছি। এখন আমরা দেখেও না দেখার ভান করি, শুনেও না শোনার ভান করি। কার কাছে গেলে পরিত্রাণ পাবো সেই পথই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যেখানে জগদ্দল পাথরের মতো সিন্দাবাদের ভুত জাতির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে আছে সেখানে আক্ষেপ-আফসোসই তো সম্বল। তাইতো এখন সব নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। যারা অবৈধ সরকারের পদলেহন করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, সুইস ব্যাংকের ভল্ট ভরেছেন, নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেগমপাড়া গড়েছেন, হাজার কোটি ডলার পাচার করেছেন, বড় বড় পদ বাগিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, তারা বাদে সব শ্রেণিপেশার মানুষকে আহ্বান করছি আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। বজ্রকণ্ঠে বাংলার আকাশে বাতাসে কম্পন তুলি স্বৈরাচারের পতন চাই। সরকার পতনের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। যার যার অবস্থান থেকে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
ইবরাহিম বলেন, দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করতে চাই- লাখো শহীদের রক্তের শপথ কোনও দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের এদেশের মাটিতে ঠাঁই হবে না। শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে দেখুন, দেশ-বিদেশের কোথাও স্বৈরাচারের আশ্রয় হয়নি। ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে গৃহীত ও প্রচারিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এগিয়ে আসুন। বাংলাদেশকে কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি মনে করে এদেশের মানুষের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে, আর পেছানোর জায়গা নেই। প্রতিরোধই একমাত্র সমাধান। কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন আমাদের অঙ্গীকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এমএইচ/আরবি