মেহেরপুর: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা শহরে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। পরে গাংনী উপজেলা শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে, ছাত্রলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হামলার সময় গাংনী শহরের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপি অফিসে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী বসে ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের একটি মিছিল গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে মিছিল নিয়ে এসে বিএনপি অফিসে ইট-পাটকেল চালিয়ে হামলা চালায়। এ সময় বিএনপি অফিস থেকে এ হামলার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে ছাত্রলীগের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে বিএনপি অফিসে এসে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা বিএনপি অফিসের দলীয় ব্যানাল টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে ফেলেন। তবে কোনো পক্ষের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
গাংনী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন মেঘলা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কয়েকজন নেতাকর্মী অন্যান্য দিনের মতোই অফিসে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় হঠাৎ ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ মিছিল করতে করতে এসে অতর্কিত হামলা চালায় আমাদের অফিসে। বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের হামলা রুখে দিতে ধাওয়া করে। ধাওয়ায় তারা পালিয়ে গিয়ে আবার নতুন করে দফায় দফায় অফিসে এসে হামলা চালায়।
এ ঘটনার পরপরই গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নেতৃত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে নেতাকর্মীরা।
এ কর্মসূচিতে যোগ দেন গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকলেছুর রহমান মুকুলসহ অন্যান্য নেতারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজামানা খোকন এমপি বলেন, সামনে ১৫ আগস্ট। বিএনপি-জামায়াত আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। আজকে তারা বিনা উস্কানিতে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে প্রমাণ করে দিয়েছে তারা সন্ত্রাসী দল।
গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিন রেজা বলেন, আমরা খবর পেয়েছি যুবদল ও ছাত্রদল আজকে তাদের অফিসে লাঠি-শোঠা ও দেশীয় অস্ত্র জড়ো করে গাংনী উপজেলা শহরে অরাজকতা চালাবে। দোকানপাট ভাঙচুরসহ সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাবে। খবর পেয়েই তাদের সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের জবাব দিতেই গাংনী পৌর বিএনপি অফিসের সামনে যাওয়া হয়। এ সময় তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এই বর্বরোচিত হামলার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মহেরপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন বলেন, আজকে আমাদের (বিএনপির) কোনো কর্মসূচি ছিল না। মাত্র কয়েকজন নেতাকর্মী প্রতিদিনেই মতোই অফিসে বসে চা খাচ্ছিল। এ সময় ছাত্রলীগ মিছিল সহকারে এসে বিনা উস্কানিতে গাংনী উপজেলা ও পৌর বিএনপি অফিসে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে, ছিড়েছে দলীয় ব্যানার।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জঙ্গি হামলা চালিয়েছে উল্লেখ করে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানোসহ হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
গাংনী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
এসআরএস