ঢাকা: বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলার করা হবে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা যেখানে সন্ত্রাস করবে সেখানেই তাদের প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে বলেও তারা জানান।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এ কথা জানান। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশব্যাপী পাঁচ শতাধিক জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। তারপর থেকে দিনটি সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এরই অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ সমাবেশে অংশ নেয়। এ সময় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, মৎস্য ভবন এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেয়। এ সময় তারা বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল বের হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেসক্লাব ও জিরোপয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নাই। এই যে জনতার ঢল, বিএনপি এই ঢল কোনো দিন দেখেনি। ফখরুল সাহেব ক্ষমতায় বসতে চান, ক্ষমতার ময়ুর সিংহাসন কত দূরে! আওয়ামী লীগ এ মাটির দল, মানুষের দল। বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার চলছে। বাংলাদেশ কোনো দিনও শ্রীলংকা হবে না। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ কোনো দিনও পাকিস্তান হবে না। গ্রেনেড হামলা, জঙ্গিবাদের দিন শেষ। ফখরুল সাহেব, আগুন সন্ত্রাস করে ক্ষমতায় আসার দিন শেষ।
ওয়ায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আজ শপথ নিতে হবে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ঠিকানা বিএনপি, দেশের রাজপথে মোকাবিলা করতে হবে। প্রস্তুত থাকেন, খেলা হবে, রাজপথে খেলা হবে, রাজপথে মোকাবিলা হবে, আগামী নির্বাচন খেলা হবে, সে খেলায় আমরা জয়লাভ করবো। নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচলেত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। ফখরুল সাহেব জাতিসংঘে আপনারা গিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরে কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। নিচের কেরানিদের সঙ্গে দেখা করে নালিশ করেছেন। বিএনপি নালিশ পার্টি। মানবাধিকার নিয়ে তদন্ত করতে বলেছেন। জাতিসংঘের বিচার করার, তদন্ত করার কোনো এখতিয়ার নাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এই সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন। সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের মানুষ আবারও আওয়ামীী লীগকে ভোট দেবে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, বিএনপি-জামায়াত আবারও দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত যে জায়গায় সন্ত্রাস করবে সেই জায়গায়ই প্রতিরোধ, প্রতিহত করা হবে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিএনপি-জামায়াতকে বিতাড়িত করতে হবে। আজকে আমাদের এই শপথ নিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত এদেশের রাজনীতিতে অপশক্তি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বাহিনী আবার পথে নেমেছে। আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম। এই অপশক্তির বাংলাদেশকে আক্রান্ত করতে দেওয়া হবে না।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২২
এসকে