বরিশাল: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশের সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি এই মুহূর্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিপদের সম্মুখহীন। একদিকে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মুখোশ পড়া বিএনপি আসলে একটি সাম্প্রদায়িক তালেবানি চক্র, অপরদিকে ধর্মের মুখোশ পড়া জামায়াত ইসলামী, রাজাকার, হেফাজত জঙ্গিরা হচ্ছে তালেবানি চক্র।
শনিবার (২০ আগস্ট) বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাসদের বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ইনু বলেন, এই মুহূর্তে রাজনীতিতে সবথেকে বড় হুমকি হচ্ছে বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত জঙ্গিদের মিলিত এই চক্র দেশের যাপিত জীবনের সমস্যাকে পুঁজি করে ঘোলা পানিতে ক্ষমতা দখলের চক্রান্তে লিপ্ত থাকাটা। আরেকটা বিপদ হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে দুর্নীতিবাজ এবং বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজির ফলে বাজারে যে অস্থিরতা-বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, তা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দুর্নীতিবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজির ফলে অর্থনৈতিক জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে একদিকে। আরেক দিকে এই সুযোগে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য বিএনপি-জামায়াত, হেফাজত জঙ্গিরা তালেবানি শাসন কায়েম করার জন্য একটি অস্বাভাবিক সরকার প্রতিষ্ঠার চক্রান্তে লিপ্ত আছে। এই দুই বিপদকে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে হলে দুর্নীতিবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি কঠোরভাবে যেমন দমন করতে হবে, ঠিক তেমনি কোনো অবস্থাতেই বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক সরকারের মাধ্যমে তালেবানি শাসন কায়েম করার চক্রান্ত করতে দেওয়া যায় না।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সংকটের কথা বলুন আর ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলুন এসবের ফলে একটা প্রভাব পড়ছে। দেশের এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের যাপিত জীবনে প্রভাব পড়েছে। কিন্তু করোনাকালে এই সরকার অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে সফল হয়েছে। আমরা মনে করি বাংলাদেশের অর্থনীতির সেই শক্তি আছে, যাতে ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশিক সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম। সমস্যা বাঁধিয়েছে দুর্নীতিবাজ বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি, যা বাজারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এরা আসলে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও অর্থনীতির জন্য মহা হুমকিস্বরূপ। সুতরাং বাজার সিন্ডিকেটের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, দুর্নীতিবাজদের এই কারসাজির সমস্যাটা মোকাবিলা করতে পারলেই আমরা যাপিত জীবনের এ সমস্যাটা সমাধান করতে পারবো।
তিনি বলেন, আমরা তো সামরিক শাসন, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদী রাজনীতি থেকে গণতন্ত্রের পথে সংবিধানের পথে যাচ্ছি এবং আমাদের সংবিধান মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে। আমাদের সংবিধান বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড স্বীকার করে না, আমাদের সরকারও স্বীকার করে না। সুতরাং জাতিসংঘের প্রতিনিধি মানবাধিকার রক্ষার পক্ষে যে কথা বলেছেন, আমরাও তো তার পক্ষে। আমাদের সাথে তো ওনার কোনো বিরোধ নেই। এখন সেই মানবাধিকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কতটুকু সফল, কতটুকু ব্যর্থ সেটা আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান করবো। সুতরাং যারা মনে করছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রশ্নে বাংলাদেশের সরকারের কার্যকলাপে সন্তুষ্ট কি অসন্তুষ্ট কিনা এবং এটা নিয়ে সরকার অদল-বদলের খেলা খেলবেন। আমি মনে করি তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জাতিসেংঘের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের নীতিগত কোনো পার্থক্য নেই। যেহেতু নীতিগত কোনো পার্থক্য নেই সুতরাং আমরা মানবাধিকার পরিস্থিতি আরও উন্নত করার লক্ষ্যে কোনো জায়গায় ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে সেগুলো সংশোধন করবো।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেনন জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
এমএস/এমজেএফ