ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উৎঘাটনে জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি তুলেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।
বুধবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ১৪৭ বিধির আওতায় আনা সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি তোলেন।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের খুনি চক্রান্তকারীদের প্রেতাত্মারা এখনও ক্ষান্ত হয়নি। আজও তারা ঘৃণ্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফিরে এসে ইতিহাসের চাকাকে ঘুরিয়ে দিতে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব চক্রান্ত ব্যর্থ করার শপথ নিতে জাতীয় সংসদে এ সাধারণ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন।
তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়টি তিনি সংসদে আনা প্রস্তাবের সঙ্গে যুক্ত করারও দাবি তোলেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ষড়যন্ত্রের স্বরূপ উৎঘাটনের জন্য জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। আইনমন্ত্রী বার বার এটা বলেছেন। তবে আমরা এটা বাস্তবে দেখতে চাই। চক্রান্ত অব্যাহত রয়েছে। এই চক্রান্ত উদঘাটন করতে না পারলে এটা প্রতিহত করা যাবে না।
মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের স্বরূপটা না বুঝতে পারলে আজকের চক্রান্তও বুঝতে পারবো না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার লাশ ৩২ নম্বরের সিঁড়িতে পড়ে থাকা অবস্থায় তার দলের সহকর্মীরা মন্ত্রীসভায় যোগদান করেছিলেন। আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীর প্রধানরা দলে দলে গিয়ে খুনিদের কাছে আনুগত্য ঘোষণা করেছেন। দেখেছি প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে জেনারেল ওসমানীকে। মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানকে দেখেছি আনুগত্য প্রকাশ করতে। তিনি পরে আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছিলেন। সেই ব্যক্তিরা পরে কী ভূমিকায় ছিলেন এবং কী ভূমিকা পালন করেছেন সেটা আমাদের জানার দরকার বলে মনে করি।
তিনি বলেন, কেবল সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত মনে করলে আমরা ভুল করবো। আত্মস্বীকৃত খুনিদের বক্তব্যগুলো খতিয়ে দেখলেই এই বিষয়টি আমরা জানতে পারবো। খুনি কর্ণেল ফারুক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র করতে চেয়েছিলেন বলেই তাকে আমরা হত্যা করেছি। আমরা পরবর্তীতে দেখেছি কীভাবে আমাদের সংবিধান থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা বাদ পড়েছে। কীভাবে সমাজতন্ত্রের সংজ্ঞা পরিবর্তন হয়ে গেছে। কীভাবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ হয়েছে।
একাধিক বই ও প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে রাশেদ খান মেনন বলেন, কেবল হত্যাকাণ্ডের দিন নয়, বাহাত্তর সাল থেকেই চক্রান্ত শুরু হয়েছে। ফারুক এবং রশীদ মার্কিন দূতাবাসে গেছেন অস্ত্রের সন্ধানে। সেই সময়কার মার্কিন দূত পরবর্তীতে সেটা স্বীকারও করেছেন। অবশ্য সিইআইএ এর সাথে জড়িত কী না সেটা তিনি (মার্কিন দূত) বলতে পারেননি। এই হত্যাকারীকে আজকে যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত আনতে চাই। তাদের কানাডা থেকে ফেরত আনতে চাই। তখন আইনী বাধা তৈরি হয়। মানবতার বাধা তৈরি হয়। তখন প্রশ্ন থেকে যায়, আসলে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে কী না।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০২২
এসকে