ঢাকা: বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গোলা বর্ষণ ও মর্টারশেল নিক্ষেপ করে হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে স্বাধীন ও স্বার্বভৌম বাংলাদেশের ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষার্থে সরকারকে মেরুদণ্ড সোজা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই আহ্বান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, মিয়ানমারের এই ঔদ্ধত্য প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনী বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গোলা নিক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় এক গভীর আতঙ্কজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকারের নতজানু ও দুর্বল কূটনীতির সুযোগে ২৮ আগস্ট শুরু হওয়া মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বেড়েই চলেছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমার বাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু। এতে এক শিশুসহ পাঁচজন আহত হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টায় উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। এর ফলে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে মর্টারশেল ছোড়ার এক সপ্তাহের মাথায় ৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার বাহিনী বারংবার আকাশসীমা লঙ্ঘন করে যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার থেকে গোলা নিক্ষেপ করে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ১২০ মিটারের ভেতরে পড়ে বিস্ফোরিত হয়, যা সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সবার স্মরণে আছে, ২০১৭ সালের ২৫ ও ২৬ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের গণহত্যার মুখে প্রাণ বাঁচাতে আট লক্ষাধিক রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এমনিতেই ১২ লাখ রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ মহাসংকটে রয়েছে। তার ওপর এখন নতুন করে সীমান্ত সমস্যা সৃষ্টি করছে মিয়ানমার বাহিনী। আর এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসক শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে।
এদিকে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হত্যা অব্যাহত রয়েছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময়েও সীমান্ত হত্যা সংঘটিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, মসিউর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
এমএইচ/এএটি