ঢাকা: রাজধানীতে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। এই কর্মসূচি সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশোডিং, গণপরিবহনের ভাড়াবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, ভোলা ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশের গুলিতে নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনসহ নেতাকর্মীর হত্যা, সারাদেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অব্যাহত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তির দাবিতে এই মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদি সরকারের জঘন্য হামলায় আমাদের যে নূরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনসহ যারা নিহত হয়েছেন- তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এই মোমবাতি প্রজ্বলন করছি। আমরা এই মোমবাতি প্রজ্বলন করছি, একটা নতুন আলোর সন্ধানে। যে আলো আমাদেরকে একটি মুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ দেখাতে পারবে।
‘আজকে মোমবাতি জ্বালাচ্ছি, আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা অবস্থা নিতে চাই, গণতন্ত্র মুক্ত করতে চাই, সেই পথ দেখার জন্যই আমরা মোমবাতি প্রজ্বলন করছি। ’
তিনি বলেন, ‘আমরা মোমবাতি প্রজ্বলন করছি, আজকেই এই প্রতিবাদ জানানোর জন্য যে-আমরা আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আছে- এই মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে। ’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সবাই এই মোমবাতি প্রজ্বলন করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এভাবেই ভয়াবহ, ফ্যাসিবাদি এবং গণতন্ত্র বিন্যাসী সরকারকে বার্তা দেবেন- সমগ্র দেশের মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ এই মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে না বলতে। তাদেরকে না বলে দিতে।
এরপরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম ঘোষণা দেন যে, এখন আজকের মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচির প্রধান অতিথি তার সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আজকের এই কর্মসূচি শেষ হবে। মির্জা ফখরুল সোয়া ৭টায় বক্তব্যে শুরু করে ৭টা ১৮ মিনিটে শেষ করেন।
সমাপনী বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কোন পথ নেই। আওয়ামী লীগের কোন পথ নেই। তারা এই সহিংসতা ও সন্ত্রাসী করেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেবে না।
‘জনগণ নিয়মতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তাদেরকে বাধ্য করবে পদত্যাগ করতে এবং পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে জনগণের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে নতুন সংসদ ও সরকার গঠন করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো। ’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কোন বাধা মানবো না। ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত। এই আলোর মতই আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।
আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, ছাত্রদল নেতা কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মোহাম্মদ জুয়েলসহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
এমএইচ/এএটি