নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুবলীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত ৯টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীবের নির্দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং, জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধি, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গণপরিবহন ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নিহত নুরে আলম, আব্দুর রহিম, শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া'র মুক্তি ও ভোটবিহীন সরকারের পদত্যাগের দাবিতে রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিশাল মশাল মিছিল বের করে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বলাইখা থেকে ভুলতা বাসষ্টেশনের দিকে আসার পথে যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করলে উভয় পক্ষ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ফিরে গেলে মাসুদের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় তার বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয় পরিবারের সদস্যদের। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা রুহুল আমিনকে ঢাকা মেডিকেল, ও ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান, অনিক, মাসুম মিয়া, জাহিদ হাসান হৃদয়, অন্তর, মাসুদুর রহমানের ভাই সাহাবুদ্দিন ও বোন রেহানাকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানের দাবি, তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করার সময় অতর্কিত হামলা করে যুবলীগ নেতাকর্মীরা। শুধু তাই নয়, তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের আহতের ঘটনা ঘটায় বলেও অভিযোগ তার।
পরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলবেঁধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এসময় তাৎক্ষনিক নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা গোলচত্বর এলাকায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্যে রাখেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন, ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার আরিফুল হক ভূঁইয়া, যুবলীগ নেতা আলামিন, আব্দুল্লাহ, উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান সবুজসহ আরো অনেকে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহিন বলেন, বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও পোড়াও করার উদ্দেশ্যে রাতে মশাল নিয়ে বের হয়েছে। যখন গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে যায় তখনই আমাদের যুবলীগ নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব বলেন, 'হামলা করার মতো কিছু ঘটেনি। রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। পরে আমাদের মাসুদের বাড়িঘরে হামলা ও তার পরিবারের সদস্যদের আহত করেছে। তার বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে। এর জবাব অবশ্যই একদিন দিতে হবে। '
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
এমআরপি/এমএইচএম