ঢাকা: মিয়ানমার সীমান্তে চলমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল-হাসানী মাইজভাণ্ডারী। বাংলাদেশ সরকারকে সীমান্ত পরিস্থিতিতে সতর্কতার পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ বলেন, গত ২৮ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বার বার মর্টারের গোলা নিক্ষেপ, রোহিঙ্গা শিবিরে হামলায় হতাহতের ঘটনা, মিয়ানমারের হেলিকপ্টার বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক আইনের অবমাননা এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত ও যুদ্ধ উস্কানির ন্যায় গর্হিত অপরাধ। বাংলাদেশের প্রতিবাদের মুখে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ঘটনাগুলো আরসা ও আরাকান আর্মি ইচ্ছা করে সংঘটিত করছে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সুসম্পর্ক নষ্টের জন্য।
তিনি বলেন, বিএসপি মনে করে, মিয়ানমারের সামরিক সরকার ২০১৭ সালের আগস্টে পরিকল্পতভাবে ‘জাতিগত নিধন’ চালিয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য করেছে। বাংলাদেশ মানবিক কারণে তাদের আশ্রয় দিলেও, পরবর্তীতে প্রত্যাবাসন চুক্তি বাস্তবায়নে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি মিয়ানমার জান্তা সরকার।
সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আরও বলেন, মিয়ানমান সুচতুরভাবে নিজদের রাষ্ট্রীয় অপরাধ ও তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার দায়ভার বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দিয়ে মূল ঘটনাকে ভিন্নদিকে প্রভাবিত করছে। আরকান আর্মি আরসা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, এই দায় কোনোভাবেই বাংলাদেশের ওপর চাপাতে পারে না মিয়ানমার। বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। আমরা মনে করি, যুদ্ধ সংঘাত কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। জাতিসংঘের মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। মিয়ানমারের উস্কানি ও ফাঁদে পা দিয়ে বাংলাদেশ অপ্রত্যাশিত যুদ্ধে জড়ালে দেশের অর্থনীতি ও অগ্রযাত্রায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ এমনিতেই নিরাপত্তাগত ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের সমাজ, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানসহ সকল বিষয় কূটনৈতিক তৎপরতা ও জাতিসংঘের মাধ্যমে করা উচিত বলে মনে করে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে চলমান পরিস্থিতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নজরে এনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান। যাতে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং অভ্যন্তরীণ অরাজকতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাধ্য হয়।
যুদ্ধ পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশ নয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তাকেও প্রভাবিত করবে উল্লেখ করে ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, একই সাথে সীমান্তে সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে সামরিক মহড়া এবং কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তার মাধ্যমে নিজেদের আপসহীন মনোভাব ও সুদৃঢ় জাতীয় শক্তির জানান দেওয়া যেতে পারে, যাতে মিয়ানমার আমাদের ধৈর্যকে দুর্বলতা মনে না করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
পিআর/এমজেএফ