ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপি বৈঠক করছে আণুবীক্ষণিক দলগুলোর সঙ্গে: তথ্যমন্ত্রী

পলিটিক্যাল ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২২
বিএনপি বৈঠক করছে আণুবীক্ষণিক দলগুলোর সঙ্গে: তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা: সংলাপের নামে বিএনপি আণুবীক্ষণিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের কাছ থেকে কাউন্সিলের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২১ গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির সাম্প্রতিক সংলাপ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

 

প্রেস কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, দি ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সম্পাদক এম. জি কিবরিয়া চৌধুরী, বিএফইউজের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী, প্রেস কাউন্সিল সচিব শাহ আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি ২০১৮ সালেও সব দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল, সংলাপ করে একটি বড় ঐক্য, তাদের ভাষায় একটি জাতীয় ঐক্য তারা প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং সেই ঐক্যের ফলাফল হচ্ছে বিএনপি মাত্র পাঁচটি আসন পেয়েছিল। সেখানে ডানপন্থি-বামপন্থি, অতি ডান-অতি বামরা ছিল। আবার মাইক্রোস্কোপিক দলগুলোও ছিল যেমন গতকাল তারা বৈঠক করেছে কল্যাণ পার্টির সাথে। আণুবীক্ষণিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে যখন তারা বলে যে বৃহত্তর ঐক্য গঠন করবে, তখন মানুষ হাসে। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান আছে, মহাসচিব যে কে আমি জানি না, মির্জা ফখরুল সাহেব জানেন কি না তাও আমি জানি না। এ ধরনের দলের সঙ্গে বৈঠক কিছু সংখ্যক সংবাদ পরিবেশন করা ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়। ’   

সাংবাদিকরা ‘বিএনপির মিছিল সমাবেশ মারমুখী বলে প্রতীয়মান’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করা। তারা ২০১৩-১৪-১৫ সালে, ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, এখনও চেষ্টা করছে। তারা উস্কানিমূলকভাবে তাদের কর্মীদের লেলিয়ে দিচ্ছে পুলিশ এবং সাধারণ জনগণের ওপর। দেখা যাচ্ছে যে, তাদেরই ইটের আঘাতে তাদের বেশ কয়েকজন কর্মী আহত হয়েছে, মৃত্যুবরণও করেছে। তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটাবে, নিজেরা নিজেদের কর্মীদের মারবে, মেরে পুলিশের ওপর দায় চাপাবে, সরকারের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করবে। ’ 

‘আমরা আমাদের দলকে সংযতভাবে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি, পুলিশও বিএনপির যুদ্ধংদেহী মনোভাব, সংঘাতের অপচেষ্টাকে অত্যন্ত সংযতভাবে মোকাবিলা করছে, কিন্তু তারা যদি এটি অব্যাহত রাখে, জনগণ তাদেরকে আবারও আগে যেভাবে প্রতিহত করেছিল তাই করবে’ বলেন তিনি।  

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি তো নতুন নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য যারা রাষ্ট্রদূত ছিল তারাও এ নিয়ে কথা বলেছে এবং অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রদূতরাও এ নিয়ে কথা বলে। আমরা তো তাদের সাথে একমত। আমরা স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন চাই এবং এটি শুধুমাত্র সরকারি দলের দায়িত্ব না, এ দায়িত্ব কিন্তু সব দলের। যারা এ নিয়ে বক্তব্য রাখছেন, আশা করি তাদের সেই বক্তব্যগুলো বিএনপিসহ যারা সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চালায় তাদের কানে পৌঁছুবে এবং নির্বাচন কমিশনের অধিনে একটি অংশগ্রহণমূলক স্বচ্ছ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে তারা সহায়তা করবে। বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা অবশ্যই আমাদের নির্বাচন নিয়ে পরামর্শ দিতে পারেন, সেটি যেন অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মতো না হয় একইসাথে কূটনৈতিক শালীনতা যেন লঙ্ঘন না হয়। ’ 

এর আগে, প্রেস কাউন্সিল প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই প্রেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটির উদ্দেশ্য ছিল পাঠক এবং সংবাদপত্রের মধ্যে যদি কোনো বিরোধ তৈরি হয় সেটি নিষ্পত্তি করা। কোয়াসি-জুডিসিয়াল বডি হিসেবে এটিকে গঠন করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি ৫০ বছর আগের এ প্রেস কাউন্সিল আইনটিকে যুগোপযোগীভাবে কার্যকর করার জন্য সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আলোচনা করে প্রেস কাউন্সিল একটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে, সেটি মন্ত্রিসভা হয়ে ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে গেছে। এরপর আবারও ভেটিং হবে।

গত ১৩-১৪ বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে, সেটির সঙ্গে নানাবিধ সমস্যা, জটিলতাও তৈরি হয়েছে বলেন তথ্যমন্ত্রী।  

তিনি বলেন, ‘নিবন্ধন নেই এমন অনলাইন পত্রিকাকে সাংবাদিক নামে পরিচয়পত্র দিতে দেখা যায়, অনেক পত্রপত্রিকা আছে যেগুলো বের হয় না, সাংবাদিকদের নিয়োগ দেয় কিন্তু বেতন দেয় না, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে সাংবাদিকদের একটা ডাটাবেজ তৈরি করার জন্য প্রেস কাউন্সিলকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কিসের ভিত্তিতে এই তালিকা হবে তার নীতিমালার খসড়া তৈরি হয়েছে। এই উদ্যোগ আমরা সরকারের পক্ষ থেকে নেইনি। বিভিন্ন সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠান, সমিতি, সংগঠনই এ দাবি উপস্থাপন করেছে। কারণ কিছু মানুষ সাংবাদিক নাম নিয়ে মানুষকে হয়রানি করা ধরনের কাজের সঙ্গে লিপ্ত হয়, আর দোষটা পুরো সাংবাদিক সমাজের ওপর বর্তায়, যেটি ঠিক নয়, সমীচীন নয়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।