ঢাকা: সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বিএনপি ও লেবার পার্টি।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দল দুটির নেতারা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় যে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছি সেই সংলাপে আজ লেবার পার্টির সঙ্গে বসেছিলাম। ডা. ইরানের নেতৃত্বে তার দলের নেতারা এসেছিলেন। আমাদের সঙ্গে ছিলেন ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল জাতীয় ঐক্যের জন্য আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের দাবিনামা চূড়ান্ত করার ব্যাপারে আলোচনা করেছি। আমরা যে খসড়া দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলোর বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের আলোচনায় সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পেয়েছে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, রাজনৈতিক নেতাদের মামলাগুলো প্রত্যাহার, ফ্যাসিস্ট অনির্বাচিত ভোটারবিহীন সরকারের পদত্যাগ। একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক অথবা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও সংসদ বিলুপ্ত। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তাদের পরিচালনায় নতুন নির্বাচন। দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন একটা সংসদ এবং নতুন সরকার গঠিত হবে। আরও অনেকগুলো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য, জ্বালানি তেলের মূল্য এসব বিষয়ও আছে। আমরা একমত হয়েছি এই দাবিগুলো নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবো।
এ সময় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, বিএনপির সাথে আজকে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি বিএনপির নেতৃত্বে ২০০৬ সাল থেকে আন্দোলন সংগ্রামে আছে। আজ জাতির এই দুঃসময়ে আমরা বেশ কয়েকটি পয়েন্টে একমত হয়েছি। আমরা সবার আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই জনগণের মুক্তি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারলে সবকিছু সম্ভব হবে। আর একটা বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা দেখেছি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। আমরা ২০১৪, ২০১৮ সালে দেখেছি। এই সরকার ২০২৩ সালের শেষের দিকে যে নির্বাচন সেটাও আবার করে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সেজন্য দেশে যে নির্বাচন হবে সেটা অবশ্যই একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যকে আমরা বেশি গুরুত্ব দেই। নিত্যপণ্যের মূল্য কোনো কোনো ক্ষেত্রে শতকরা ১০০ ভাগ বেড়ে গেছে। জনগণের অনেক কষ্ট হচ্ছে। সেজন্য দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি। এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। গুম-খুন-অপহরণসহ সর্বস্তরে সরকার নাভিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। লাখ লাখ মামলায় লাখ লাখ আসামি, হাজার হাজার মানুষ গুম-অপহরণের শিকার। আয়নাঘরের প্রশ্ন এসেছে। আয়নাঘরে মানবাধিকার বন্দি। যেসব জায়গায় মানুষ বন্দি আছে তাদের উদ্ধারের জন্য আমরা উদ্ধার অভিযানে নামতে চাই। সেটা এই সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে নতুন সরকার আনতে পারলে করতে পারবো।
এ সময় লেবার পার্টির মহাসচিব ফারুক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এস এম ইউসুফ আলী, আমিনুল ইসলাম রাজু, আলাউদ্দিন আলী, জহিরুল হক জহির, আমিনুল ইসলাম আমিন, রামকৃষ্ণ সাহা, যুগ্ম-মহাসচিব হুমাউন কবির ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার মিরাজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ