ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বড় নয়, ওনার কাছে ক্ষমতায় থাকাই সবচেয়ে বড় বিষয়।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা।
সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার প্রতিবাদ এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।
রিজভী বলেন, আজকে দেশে কী পরিস্থিতি বিরাজমান! গত পরশু রাতে সোনিয়া নামের এক মহিলা দল নেত্রীকে রাজবাড়ী থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তার দুটি বাচ্চা আর্তনাদ করেছে। সেই মেয়ে দিনের বেলা গ্রেফতারের দাবি জানালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাকে অমানবিক ও বর্বোরোচিতভাবে গ্রেফতার করে। তিনি নাকি ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে!
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী কি বলবেন যে, তার কতো পার্সেন্ট সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে? শতকরা ৩০ ভাগ, ৪০ ভাগ সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে? ইডেনের ঘটনায় আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না? কারণ তারা তো ছাত্রলীগ? আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) আদর্শের সন্তান তারা। তাদের অপকর্মে আপনার সুনাম নষ্ট হয় না? ছাত্রলীগের সভাপতি, সেক্রেটারি যখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে মোবাইলে ভবন নির্মাণের চাঁদা দাবি করে তখন কি সুনাম ক্ষুন্ন হয় না? পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলেন যে, পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে কথা বলবো যে, ক্ষমতায় রাখা যায় কিনা? তখন কি আপনার সুনাম ক্ষুন্ন হয় না? আপনি দুই সন্তানের মাকে রাতের আঁধারে গ্রেফতার করেছেন। এটাতে আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয় না? ফেসবুকে একটা পোস্ট দেওয়ার কারণেই আপনার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে?
রিজভী আরও বলেন, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একটি নাম। তিনি দুঃখ কষ্ট সহ্য করলেও কখনো আত্মসমর্পণ করেননি। দেশ ছেড়ে গেছেন এমন নজির নেই। সবকিছুকে ছাপিয়ে তিনি মহীয়ান ও জাতীয় জীবনের বাতিঘর। তিনি জীবন বাজি রেখে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে আপসহীন নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ওয়ান ইলেভেনে একজন নেত্রী দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন কিন্তু খালেদা জিয়া তা করেননি। আত্মসমর্পণ না করে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে কীভাবে আপসহীন নেতৃত্ব দিতে হয় তার নাম খালেদা জিয়া। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা। গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন থাকা নেত্রীর নাম খালেদা জিয়া। তিনি এখনো জেলে, আজ পর্যন্ত কখনো শুনিনি গণতন্ত্রকে একপাশে রেখে আপস করার কথা।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি খলিলুর রহমান ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও আব্দুল্লাহ আল নাইমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিলন মেহেদী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) শাহাদাত হোসেন সেলিম, কল্যাণ পার্টির সাহিদুর রহমান তামান্না, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, ইসমাইল চৌধুরী খোকন, কাদের সিদ্দিকী ও ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২২
এমএইচ/এমজেএফ