নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দাউদপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মাঝে কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
শনিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে দাউদপুর ইউনিয়নের রোহিলা এলাকার বটতলায় একই স্থানে দুই পক্ষই সমাবেশ আয়োজন করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশঙ্কায় র্যাব-পুলিশের কঠোর অবস্থানে থাকায় সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মোল্লা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরেই দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
একটি পক্ষের আ. লীগ নেতা বিল্লাল মেম্বারসহ তার অনুসারীরা শনিবার বেলা ১১টার দিকে রোহিলা বটতলা এলাকায় একটি সমাবেশের আয়োজন করেন। একই স্থানে অপর পক্ষের দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারসহ তার অনুসারীরা পাল্টা সমাবেশের আয়োজন করেন। এ সমাবেশ কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা ছিল। এজন্য সমাবেশের আগে থেকেই র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কঠোর অবস্থানে ছিলেন।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখানে কোনো পক্ষ কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটালে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এরপর কোনো পক্ষের লোকজনই ঘটনাস্থলে আসেননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দাউদপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত শনিবার (০১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে জিন্দা এলাকায় কর্মী সমাবেশ ও সদস্য সংগ্রহের আয়োজন করা হয়। সেখানে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান সভাপতি মামুন আকন্দ ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামানকে পুনরায় বিজয়ী করতে সমর্থন করেন স্থানীয় আ. লীগ নেতা বিল্লাল মেম্বার, যুবলীগ নেতা শাহিন মালুম ও রফিকুল ইসলামসহ তাদের নেতা-কর্মীরা।
অপর দিকে, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি প্রার্থী সামসুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হারুন অর রশিদ বিপ্লবকে সমর্থন করেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীরসহ তার অনুসারীরা।
এ নিয়ে কর্মী সভায় এক পক্ষ আরেক পক্ষকে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় উভয় পক্ষ আলাদা ভাবে কর্মী সমাবেশ করেন। এ সময় কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল আলীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আল সায়েমসহ নেতারা উভয় পক্ষের সভায় বক্তব্য রাখেন এবং উভয় পক্ষকে বিভাজন দূর করে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। দুই পক্ষ একমত না হওয়ায় কমিটি না দিয়ে তারা ফিরে যান।
এরপর বৃহস্পতিবার (০৬ অক্টোবর) বিকেলে দাউদপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড কালনি এলাকায় আওয়ামী লীগের এক সভা হয়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম।
ওই সভায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান সভাপতি মামুন আকন্দ ও সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামানসহ তাদের লোকজন হামলা চালান। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হন। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) বলেন, উভয় পক্ষকে ডেকে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো পক্ষই আর কোনো ঝামেলায় জড়াবেন না। এখন থেকে আর সমস্যা হবে না। এছাড়া ওই ইউনিয়নের সকল নেতাকর্মীরা এখন থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২২
এমআরপি/এসআইএস