ঢাকা: গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে না এসে ভারত বা অন্য কোনো রাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে থেকে এবং হামলা-মামলা কিংবা গুলি করে শেষ রক্ষা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
সোমবার (১০ অক্টোরর) বিকেলে ঢাকার বিভিন্ন থানায় বিক্ষোভের অংশ হিসেবে কারওয়ান বাজারে ‘রাজনৈতিক সভা সমাবেশে বাধা, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন, গুলি-হত্যা বন্ধের’ দাবিতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
গণঅধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক ফরাজির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নূরুল হক নূর, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন। সমাবেশ পরিচালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের ঢাকা মহানগর সমন্বয়ক মহীবুল্লাহ বাহার।
সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, খেতে না পারা মানুষ প্রতিদিন সরকারকে গালি দিচ্ছে। আমরা ক্ষমতায় গেলে চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রাখবো। বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করবো। আমরা ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রের খোলনলচে পাল্টে ফেলবো।
সাইফুল হক বলেন, সরকারের পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চের তরফ থেকে দেশব্যাপী মিছিল-সমাবেশের মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত করে অপরাপর বিরোধীদলগুলোর সাথে যুগপৎ ধারায় এই চরম ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিধায় করার বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারকে গদি থেকে নামাতে আসুন সকলে হাত লাগাই। দড়ি ধরে মারো টান, শেখ হাসিনা সরকার হবে খান খান। আগামী দিনে বাংলাদেশে কোনো প্রতিশোধের রাজনীতি আমরা হতে দেবো না। আমরা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য নতুন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সূচনা করতে চাই। সংবিধান সংস্কার, ক্ষমতার ভারসাম্য, জবাবদিহিতা, শাসনতান্ত্রিক সংস্কারসহ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা ইতোমধ্যে ৭ দফা উত্থাপন করেছি। গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে না এসে ভারত বা অন্য কোনো রাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে থেকে এবং হামলা-মামলা কিংবা গুলি করে শেষ রক্ষা হবে না, গদি রক্ষা করতে পারবেন না। আমরা সরকার পতনের লড়াইয়ের সূচনা করেছি।
নুরুল হক নূর বলেন, সরকার গদি রক্ষার জন্য চরম মিথ্যাচার করেছে। সরকার ও পুলিশবাহিনীর সদস্যদের হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ আন্দোলনে হামলার পরিণতি ভালো হবে না। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ, সরকারি বাহিনী যারাই হামলা করবে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
শহীদ উদ্দীন মাহমুদ স্বপন বলেন, আজকে সরকার প্রতিবাদী মিছিলে গুলি করে জনগণের রক্ত ঝরাচ্ছে। আমরাও জানি ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে রক্ত দিতে হবে। আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত।
হাবিবুর রহমান রিজু বলেন, দেশে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য চলছে। ব্যাংক থেকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা চুরি চলছে। আসন্ন দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা পেতে এই লুটেরা সরকারের পতনের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে।
ইমরান ইমন বলেন, লুটেরা শাসকের পক্ষে সর্বোচ্চ হলে ২০ হাজার দুর্নীতিবাজ মানুষ আছে। দেশে অধিকারহীন মানুষ একবার সমস্বরে আওয়াজ তুললে এই ২০ হাজার অপরাধী দেশ থেকে পালিয়ে যাবে।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একের পর এক মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষকে মর্যাদাহীন করেছে। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার প্রতিটা ক্ষেত্রেই চরমভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে সারাদেশে এই স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২২
পিআর/এমজেএফ