নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কার্যক্রম বর্তমানে আন্দোলনমুখী। দিনের পর দিন রাজপথে আড়ালে কর্মসূচি করলেও সম্প্রতি প্রধান প্রধান সড়কে নেতাকর্মীদের নিয়ে বেশ জানান দিয়েই কর্মসূচি পালন করছে দলটি।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বিএনপির রাজনীতির আগামী দিনের নানা পরিকল্পনা। নেতাকর্মীরা জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা বর্তমানে রয়েছেন হার্ডলাইনে। শত শত মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা আর নির্যাতন বা মামলা মাথায় নিতে নারাজ তাই যেকোন মূল্যে এবার রাজপথে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলে কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় করে আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে চায় দলটি।
জানা যায়, ২০১৩ সাল থেকে হার্ডলাইনের আন্দোলনে রয়েছে দলটি। তবে এত বছরে এভাবে সাহস ও শক্তি নিয়ে রাজপথে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি দলটি। নারায়ণগঞ্জ জেলা আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। কিন্তু বিগত সময়ে আন্দোলনের মাঠে তেমন ঝড় তুলতে পারেনি জেলাটি। এর মধ্যেই মামলা গ্রেফতার কারাবাস ও পুলিশের পিটুনীতে নাজেহাল ছিল নেতাকর্মীরা। এহেন অবস্থায় নেতাকর্মীরা এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে দাবি করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে বিএনপির সর্বোচ্চ নেতা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান। এ সাজাটিকে প্রহসনের রায় দাবি করলেও সেসময় নারায়ণগঞ্জে চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো আন্দোলন দেখাতে পারেনি দলটি। বর্তমান সময়ে দেখা গেছে তার ভিন্ন চিত্র। দলের নেতা কে বিবেচনায় না নিয়ে এক্যবদ্ধ হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটি। রাজপথে ইতোমধ্যে গড়ে তুলেছে শক্ত অবস্থান।
দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলের এখন টার্গেট যেকোন মূল্যে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করা। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গ্যাস, বিদ্যুতের চড়া মূল্য, তেলের দাম বাড়া ও লোডশেডিংসহ নানা ইস্যুতে এখন মানুষ সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধ। যেকোন মূল্যে এই নাভিশ্বাস অবস্থা থেকে মুক্তি চায় মানুষ। আর সে সুযোগে যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা বিএনপি করে দিতে পারে তবে বাকি কাজ মানুষ ভোটে করে দেবে। আর তাই এ মুহূর্তে সরকার পতনের আন্দোলনের বিকল্প দেখছেনা বিএনপি। সেই আন্দোলনে কেন্দ্রের নির্দেশ মতো কাজ করতে মাঠে রয়েছে দলটি।
দলের নারায়ণগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি বাংলানিউজকে জানান, এখন আর ভিন্ন কোনো পথ নেই সবার পথ এক পথ। সেই পথ হচ্ছে বেঁচে থাকার জন্য লড়াইয়ের পদ। এখন আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে এ সরকারের পতন নিশ্চিত করে মানুষের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দিতে হবে। আর সেই লক্ষ্যে এখন সব মোহনা এক সঙ্গে এসে মিশেছে। এখন আমরা একত্রিত হয়ে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ দখলে রেখে সব আন্দোলন সংগ্রামের কর্মসূচি সফল করে এ সরকারের পতন ত্বরান্বিত করবো।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এমআরপি/আরআইএস