নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিকে ব্যর্থ উল্লেখ করে দ্রুত কমিটি পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। দীর্ঘদিন ক্ষমতাসীন দলটির দায়িত্বে থেকেও দলের নেতাকর্মীদের ওয়ার্ডভিত্তিক পদ পদবি দিতে না পারায় ক্ষুব্দ নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ঘোষণা করা হয় আনোয়ার হোসেনকে ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে। ৭ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর ৭১ সদস বিশিষ্ট মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করে দলটি। অনুমোদিত এ কমিটি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এ কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- শেখ হায়দার আলী পুতুল, চন্দন শীল, রোকনউদ্দিন আহমেদ, হালিম শিকদার, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, মাসুদুর রহমান খসরু, রবিউল হোসেন, কমান্ডার গোপীনাথ, শাহাবউদ্দিন আহমেদ। যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে তিনজন, তারা হলেন- আহসান হাবিব, জিএম আরমান, শাহ নিজাম। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনজন, তারা হলেন- জাকিরুল আলম হেলাল, মাহমুদা আক্তার মালা ও জিএম আরাফাত। এ ছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মীর আনোয়ার হোসেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. আতিকুজ্জামান সোহেল, প্রচার সম্পাদক খালিদ হাসান, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আতাউর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক গাজী আব্দুর রশিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ পদে কামাল দেওয়ান, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন শিলু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আছিয়া বেগম সুমী, দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিদ্যুৎ কুমার সাহা, উপ-দফতর সম্পাদক মামুন গাজী।
তা ছাড়াও কার্যকরী সদস্য পদে আছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সেক্রেটারী হাজী ইয়াছিন, আবেদ হোসেন, ওসমান গনি, সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, সোহরাব হোসেন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, পুলক কান্তি ঘোষাল, উত্তম কুমার সাহা, সাজ্জাদুর রহমান সুমন, জিএম পারভেজ, সানোয়ার তালুকদার, ফাইজুল পারভেজসহ ৭১ জন।
কমিটি ঘোষণার পর আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিনি ৪০ জনের ও খোকন সাহা ৪০ জনের নামের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দেওয়া হয়েছে। সেখানে হয়তো আনোয়ার হোসেনের ৩৫ কিংবা ৩৬ জন অথবা খোকন সাহার ৩৫ কিংবা ৩৬ জনের নাম রাখা হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই এ কমিটি নিয়ে এসেছি। আমাদের ঐক্য আরও জোরালো হবে।
যদিও এরপর থেকে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঐক্যের পরিবর্তে দূরত্ব তৈরি হয়। এর মধ্যে ৭ বছরেও মহানগর আওয়ামী লীগের কোনো ওয়ার্ড কমিটি করতে পারেনি দলটি। এ নিয়ে দলের তৃণমূলে বিরাজ করছে তীব্র ক্ষোভ। আর তাই দ্রুত কমিটিকে ব্যর্থ দাবি করে পরিবর্তন চান কর্মীরা।
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত বলেন, ওয়ার্ড কমিটি কেন করা যায়নি সেটা স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। হয়ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ছিল। সে কারণেই হয়তো ওয়ার্ড কমিটিগুলো হয়নি।
কমিটির ব্যর্থতার দায় নিজের ওপর নিয়ে তিনি বলেন, দায় তো আমাদের সবারই। আমি যেহেতু মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যর্থতার দায় আমার ওপরও বর্তায়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটি করতে পারেননি। তাই এ দায় আমাদের নিতেই হবে।
আসন্ন কাউন্সিল সম্পর্কে কোনো কথা বলেননি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক। বিষয়টি নিয়ে অন্য নেতারাও কোনো কথা বলতে চাননি।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এমআরপি/এসএ