ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

‘গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলতে পারে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২২
‘গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলতে পারে না’

যশোর: গণতন্ত্র ও আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলতে পারে না বলে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রোববার (৬ নভেম্বর) যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দলটির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ধংসের কিনারে চলে গেছে। বাংলাদেশ আর্থিকভাবে বিশাল সংকটে। এই সংকটের প্রধান কারণ বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার। তারা এখন গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে। বিনাভোটে আর রাতের ভোটে সরকার হয়েছে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেশে গণতন্ত্র হরণ করেছে। গণতন্ত্রহীন দেশে অর্থনৈতিকভাবে কখনো মুক্তি আসে না। তাই এদেশ অর্থনৈতিকভাবে ধংস হয়েছে, লুটপাট, দুর্নীতি মুদ্রা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এ কারণে দেশে ডলার সংকটের সঙ্গে জ্বালানি আমদানি আর বিদ্যুৎ সংকটের ভয়বহতা প্রকট হয়েছে।

যশোর জেলা বিএনপির আয়োজিত এ স্মরণসভায় তিনি আরও বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ ৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ভোট চুরি, ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্র ধংস করেছে। অর্থনৈতিক ও গণতন্ত্রের এই সংকটে দেশটাকে রক্ষা করতে হলে দেশের গণতন্ত্রের মাথা জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব দেশনেত্রী খালিদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে দেশে ফিরিয়ে এনে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। আর এই ক্ষেত্রগুলো তৈরি করতে হলে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। যারা দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে; তারা সহজে গণতন্ত্র ফিরায়ে দেবে না। যারা অর্থনীতিকে ধংস করেছে তারা অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে পারবে না। যারা বিচার বিভাগকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে, তারা সেই বিচার বিভাগকে স্বাধীন করতে পারবে না। তাই দেশের সক সেক্টরে মানুষকে মুক্তি দিতে এই গণতন্ত্র হরণ করা সরকারকে উৎখাত করতে হবে। তাই আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত আমাদের সরকার পতনের আন্দোলন করে যেতে হবে। সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।  

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার অনেক আগেই জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। দেশর কৃষক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষ নিষ্পেশিত হচ্ছে। তারপরও বর্তমান সরকারের কিছু যায়-আসে না। কারণ তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না।

দলের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, বিএনপির তরিকুল ইসলাম ছিলেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের নেতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কাজ কর্মে তিনি এটাই প্রমাণ করে গেছেন। তিনি অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন মানুষের কল্যাণের প্রতি। মানুষের সুখে-দুঃখে, বিপদে-আপদে, সংশয়-সংকটে তিনি কাছে ছুটে যেতেন।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সদস্য রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুর বারী হেলাল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আসাদুজ্জামান, খুলনা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফফর আহমেদ আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান, সাতক্ষীরা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু প্রমুখ। স্মরণসভা উপলক্ষে রোববার সকাল থেকে যশোরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে সভাস্থলে যোগ দেন। এছাড়া স্মরণসভায় যশোর, খুলনা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহসহ খুলনা বিভাগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৭ ঘণ্টা, ৭ নভেম্বর ২০২২
ইউজি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।