ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

পৃথিবীতে বহুদেশ গণহত্যার জন্য ক্ষমা চেয়েছে, পাকিস্তানকেও চাইতে হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২২
পৃথিবীতে বহুদেশ গণহত্যার জন্য ক্ষমা চেয়েছে, পাকিস্তানকেও চাইতে হবে ছবি: ডিএইচ বাদল 

ঢাকা: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, পাকিস্তানের কাছে দাবি করেছি আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

যে দাবিগুলো করা হয়েছে যৌক্তিক। এই দাবি বারবার করে আসছি। পাকিস্তানের ভেতরেও অনেক কন্ঠস্বর আছে যারা এই দাবির পক্ষে। পৃথিবীতে বহুদেশ, গণহত্যার জন্যে ক্ষমা চেয়েছে। পাকিস্তানেরও সত্য মেনে নিয়ে, ক্ষমা চাওয়া উচিত।

কিন্তু জাতিসংঘকে সত্য নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সরকার এটি নিয়ে কাজ করছে।  

বুধবার(৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘৭১ এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায়  শিক্ষামন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।  

মন্ত্রী বলেন, আমদের বিশ্বাস ও স্বপ্ন সত্যি করে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বেআইনি আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২১ বছরের যত জঞ্জাল তা সরাতে হয়েছে। এখনও হচ্ছে। তিনি একদিকে অতীতের জঞ্জাল সরাচ্ছেন আরেক দিকে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন।  

মন্ত্রী বলেন, এদেশে স্বাধীনতার ৪০ বছর পরে হলেও যুদ্ধপরাধীদের বিচার হয়েছে। এই বাংলাদেশে আর কেউ তা করতে পারেনি শেখ হাসিনা পেরেছেন। আমাদের অনেক ইচ্ছা ছিল কিন্তু এটি হবে সে কথা বিশ্বাস করতেও ভয় পেয়েছি।  

দীপু মনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার প্রকাশ্য ঘোষণা ছাড়া অলিখিত বক্তব্যে সবই বলে দিয়েছিলেন। এদেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে, জয় বাংলা নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পৃথিবীতে এতো দাম দিয়ে আর কোনো দেশ স্বাধীন হয়নি।

রুয়ান্ডাতে তিন মাসে ১০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে,আর বাংলাদেশে ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পরেও তারা কেন এদেশে রাজনীতিতে থাকবে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি কেন এদেশে থাকবে স্বাধীন দেশের এতোবছর পরও ক্ষমতায় আছে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি আর বিরোধী দলে আছে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি। পরপর তিন মেয়াদে স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি আছে। এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কেউ করতে পারিনি, শেখ হাসিনা পেরেছেন।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাকিস্তানিরা ৫২-তে মুখের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, বিহারীরা বাঙালিদের ৫৪ সালে হত্যাযজ্ঞ চালায়, ৬৯ সালে সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যা করা হয়েছে। একাত্তরে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর যুদ্ধ করতে করতে ঢাকা এসে দেখি সাধারণ মানুষের লাশ আর লাশ, চারদিকে কান্নার রোল। আলবদর, আল-শামসদের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন ৪ কোটিতে পৌঁছেছে। এদের বিরুদ্ধে লড়াই চালু রাখতে হবে।  

আলোচনা সভায় ১৯৭১ এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই-এর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের যুগ্ন আহ্বায়ক অধ্যাপক শহীদুল্লাহ সিকদার।

শহীদুল্লাহ্ শিকদার বলেন, বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীদের ওপরই ২৫ মার্চে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপরাশেন সার্চলাইট নামে গণহত্যা চালায়।

পশ্চিমবঙ্গের ইংরেজি পত্রিকা দ্য ওয়াল-এর নির্বাহী সম্পাদক অমল সরকার বলেন, দেশে গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে দিলে যারা স্বাধীনতার বিরোধীশক্তি সে যত দুর্বল হোক না কেন তাকে আগে নির্মূল করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত থাকলে তবেই তা সম্ভব।

এ সময় বাংলাদেশের স্বাধীনতা, ভারতের স্বাধীনতা, পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও দেশ ভাগের বিস্তারিত নিয়ে অমল সরকারের আমার দেশ আমার দ্যাশ বইয়ের মোড় উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২২
এনবি/এসআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।