ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

জ্বালানি নিরাপত্তা ও উত্তরণ

মিৎসুবিশি পাওয়ারের সঙ্গে শিল্পখাত নেতাদের আলোচনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
মিৎসুবিশি পাওয়ারের সঙ্গে শিল্পখাত নেতাদের আলোচনা

ঢাকা: জ্বালানি নিরাপত্তা, উন্নয়ন এবং ডিকার্বনাইজেশনসহ এই খাতের অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পের সর্বাধুনিক সল্যুশন ও সার্ভিসকে সামনে রেখে ‘২০২২ গ্যাস টারবাইন টেকনিক্যাল সেমিনার ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেমিনারের আয়োজন করেছে মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজের পাওয়ার সল্যুশন ব্র্যান্ড মিৎসুবিশি পাওয়ার।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) সেমিনারের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে শিল্পখাতের নেতা এবং স্থানীয় অংশীজনসহ প্রায় ২০০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধি আয়োজনে অংশ নেন।

দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে মিৎসুবিশি পাওয়ারের প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বিশেষ ইউজার সেশনে প্রেজেন্টেশনে মিৎসুবিশি পাওয়ারের হাইড্রোজেন এবং অ্যামোনিয়া কো-ফায়ারিংয়ের মতো ডিকার্বনাইজেশন প্রযুক্তি থেকে শুরু করে গ্যাস টারবাইনের নির্ভরযোগ্যতা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির মতো শিল্পখাতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম সল্যুশন ও পরিষেবাসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সেমিনারটি চলবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সেমিনারটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান, জাপান দূতাবাসের প্রতিনিধি ও মিনিস্টার (ডেপুটি চিফ অব মিশন) জন মাচিমা তাতসুয়া এবং মিৎসুবিশি পাওয়ার এশিয়া প্যাসিফিকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ওসামু এনো উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা জ্বালানি নিরাপত্তা, সহজলভ্যতা ও সামর্থ্য বজায় রেখে ক্লিনার এনার্জিতে বাংলাদেশের উত্তরণে পাশে থাকার লক্ষ্যে দেশের সংশ্লিষ্ট খাত ও শিল্পে অংশীদারিত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

মিৎসুবিশি পাওয়ার এশিয়া প্যাসিফিকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ওসামো ওনো বলেন, এশিয়া প্যাসিফিকের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম, যেখানে মিৎসুবিশি পাওয়ার ১৯৬০ সালে সফলভাবে একটি স্টিম টারবাইন সরবরাহ করেছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতিতে অবিচল রয়েছি এবং দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ২০ শতাংশের দায়বদ্ধতা আমাদের রয়েছে। সম্ভাব্য অগ্রগতি সাধন করা সম্ভব করা গেলে এ দেশের বিদ্যুৎ খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের মূল্যবান অংশীদার ও গ্রাহকদের সাথে নিয়ে আমরা বাংলাদেশের স্থানীয় চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে জিরো কার্বন নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাবিবুর রহমান জানান, সারা দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষমাত্রা অর্জনের পর তাদের অন্তর্তীকালীন লক্ষ্য হলো সকলের জন্য সাশ্রয়ী, উন্নতমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। বিদ্যুৎ বিভাগের এই সচিব আশা প্রকাশ করেন যে, ২০০০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য পূরণে মিৎতসুবিশি পাওয়ার বাংলাদেশের পাশে থাকবে।

তিনি ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’র কথা উল্লেখ করে হাইড্রোজেন প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং গ্রিন হাইড্রোজেন ও ব্লু জাইলোজেনের মতো পরিষ্কার ও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহারের ওপর জোর দেন।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান দেশের জ্বালানি খাতের চাহিদা পূরণে প্রধান প্রধান সহযোগিতামূলক প্রকল্পসমূহ তুলে ধরেন। প্রায় ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে মিৎসুবিশি পাওয়ার বাংলাদেশ সরকারের সাথে পাবলিক প্রাইভেট অংশীদার হিসেবে যুক্ত করেছে এবং এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে সাহায্য করে আসছে বলে জানান মাহবুবুর রহমান।

বর্তমানে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও হাইড্রোজেন কেন্দ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করেছে, যা কার্বন নির্গমণের মাত্রা হ্রাস করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। সেমিনারটির মাধ্যমে মিৎসুবিশি পাওয়ার দেশের জ্বালানি চাহিদা পুরণের সাথে সাথে কার্বন নির্গমণের লক্ষ্য অর্জনে সরকারের সাথে অংশীদারি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মিৎসুবিশি পাওয়ারের গ্যাস টারবাইনগুলো সারা দেশে পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিডকে সহযোগিতা করছে। এর এম৭০১এফ গ্যাস টারবাইনটি হরিপুরে বাংলাদেশের প্রথম বৃহৎ-গ্যাস টারবাইন হিসেবে ইনস্টল করা হয়েছিল এবং ২০১৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটি দেশের সবচেয়ে দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য টারবাইনগুলোর একটি। সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্ল্যান্টগুলো কার্যকর রাখতে বিক্রয়োত্তর এবং অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবার বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলে জানান মিৎসুবিশি কর্তৃপক্ষ।

সেমিনারে মিৎসুবিশি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (এমএইচআই) পাওয়ার সল্যুশন ব্র্যান্ড মিৎসুবিশি সম্পর্কেও ধারণাপত্র তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা তাকানরি মুসিযাওয়া। তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী ৩০টিরও বেশি দেশজুড়ে মিৎসুবিশি পাওয়ার জ্বালানি খাতের এমন সব সরঞ্জামের ডিজাইন, উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ করে, যা ডিকার্বনাইজেশন সচল রাখে এবং বিশ্বজুড়ে নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করে।

হাইড্রোজেন ফুয়েলড গ্যাস টারবাইনসহ গ্যাস টারবাইনের বিশাল এক সমাহার, সলিড-অক্সাইড ফুয়েল সেলস (এসওএফসি) এবং এয়ার কোয়ালিটি কনট্রোল সিস্টেমস (একিউসিএস) মিৎসুবিশি পাওয়ার দৃষ্টান্তমূলক সেবা প্রদান এবং জ্বালানির ভবিষ্যৎ চিত্র তৈরিতে গ্রাহকদের সাথে একসাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২২
এসআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।