ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আদানির বিদ্যুৎ: জটিলতা আরও বেড়েছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩
আদানির বিদ্যুৎ: জটিলতা আরও বেড়েছে মুর্শিদাবাদে ফল বাগানের ওপর দিয়ে টানা হচ্ছে আদানির বিদ্যুতের লাইন

কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত): বাংলাদেশে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ পাঠানোর বিরোধিতা করে এর ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। মামলাটি করেছে পশ্চিমবঙ্গের ৩০ জন ফল চাষী ও এপিডিআর নামে একটি মানবাধিকার সংগঠন।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ছিল তার শুনানি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা নাগাদ শুনানি শুরু হয়।

এ বিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী ঝুমা সেন এজলাসে বলেন, ঝাড়খন্ড এবং মুর্শিদাবাদ হয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে হাই টেনশন বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ করেছে তারা। কৃষকদের নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। একের পর এক আমগাছ, লিচুগাছসহ ফলনশীল গাছ কেটে দিয়েছে আদানি। কৃষকদের এই গাছগুলোই জীবন জীবিকার অর্থ যোগান দেয়। কৃষকদের সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা না করেই আদানি সব কাজ করেছে। অবিলম্বে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদন করছি। ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত আদানির বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ বন্ধ রাখারও আবেদন করছি।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আদানি গোষ্ঠীর আইনজীবী আদালতে বলেন সবত নিয়ম মেনেই বিদ্যুৎ সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন মেনে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণ হয়েছে। যে কৃষকরা বিদ্যুৎ সম্প্রসারণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। এখানে তথ্য গোপন করা হচ্ছে। যারা মামলা করেছে তারা কৃষক বলে নিজেদের দাবি করেছে। স্থানীয় কৃষকদের এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।

দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পর প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ আদানি গোষ্ঠী ও মামলাকারী পক্ষকে নির্দেশ দেয় আদালতে হলফনামা আকারে তাদের স্বপক্ষে পুরো বিষয়টি জমা দেওয়ার। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৭ এপ্রিল।

উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলা দিয়ে খুঁটির মাধ্যমে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার (হাইটেনশন) যাচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু জেলার যে অংশের উপর দিয়ে আদানির এই বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন যাচ্ছে, সেই ফারাক্কা নামক জায়গায় প্রচুর পরিমাণ আম ও লিচুর বাগান থাকায় তাতে প্রবল আপত্তি জানায় সেখানকার ফল বাগিচার চাষীরা।

গত বছরের জুলাই মাসে এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জড়িয়ে পরে গ্রামবাসীরা। আহত হয় একাধিক গ্রামবাসী ও পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ছিল, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক আম-লিচু বাগানের উপর গিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে আদানি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।